পঙ্গপাল নিয়ে আপাতত বাংলাদেশের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই

মত ও পথ প্রতিবেদক

পঙ্গপাল
ফাইল ছবি

প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান যখন পঙ্গপালের হানায় নাস্তানাবুদ তখন এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার অবকাশ রয়েছে বাংলাদেশেরও। তবে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আশ্বস্ত করছে, এ নিয়ে আপাতত বাংলাদেশের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। মৌসুমী বায়ু অনুকূলে থাকবে না, তাই এ বছর বাংলাদেশে পঙ্গপাল আসার সম্ভাবনা নাই।

বিশ্বজুড়ে পঙ্গপালের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে এফএও। একইসঙ্গে দেশগুলোকে এ বিষয়ে সতর্কও করছে। সংস্থাটি গত ২৭ মে প্রকাশিত তাদের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণে জানায়,  রাজস্থানে থেকে পঙ্গপালের ঝাঁক মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে যেতে থাকবে। আরো কয়েকটি ঝাঁক রাজস্থানে ঢুকতে পারে জুলাই পর্যন্ত।

universel cardiac hospital

এরা বাতাস অনুকূলে পেয়ে বিহার ও উড়িস্যাতেও পৌঁছে যেতে পারে। এরপর মৌসুমি বায়ূ দিক বদলাতে শুরু করলে এরাও রাজস্থানের দিকে ফিরে আসবে। ওই সময় তাদের প্রজণনের সময় হবে এবং চলাচল থেমে যাবে। ফলে দক্ষিণ ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা পঙ্গপালের খুব একটা নাই।

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ এক প্রতিবেদনে জানান, গত মাসের শুরুতে তিনি এফএও’র পঙ্গপাল পূর্বাভাস বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা কিথ ক্রেসম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

বাংলাদেশে পঙ্গপাল আসার সম্ভাবনা কতটুকু এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কয়েকটি কারণেই বাংলাদেশে পঙ্গপাল হানা দেয়ার সম্ভাবনা নাই। প্রথমত, বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে আছে পঙ্গপাল। দ্বিতীয়ত, তারা বাতাসের বিপরীতে উড়তে পারে না। তৃতীয়ত, বাংলাদেশ অনেক আর্দ্র ও সবুজ, মরু পঙ্গপালের বসবাসের জন্য এ আবহাওয়া অনুকূলে নয়।’ 

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পঙ্গপাল শুষ্ক আবহাওয়া পছন্দ করে। এদেশের আবহাওয়া আর্দ্র ও শুষ্ক।  তাই এ দেশে  পঙ্গপালের আক্রমণের সম্ভাবনা কম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরে এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত ৪৯ বছরে দেশে পঙ্গপালের কোন  আক্রমণ হয়নি।  কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের সতর্ক এবং প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।  তবে এ বছর তেমন ঝুঁকি নাই, আগামী বছরের জন্য আমাদের সতর্ক হতে হবে।

মরু পঙ্গপালের একটি ঝাঁকের বিস্তার কয়েকশ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক পঙ্গপাল নিজের ওজনের সমান (২ গ্রাম) শস্য একদিনে খেয়ে শেষ করতে পারে। এক বর্গ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী পঙ্গপাল যে পরিমাণ ফসল নষ্ট করে, তা দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে এক বছর খাওয়ানো যায়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে