দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এত ভয়াবহ মন্দা আসতে চলেছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব ব্যাংক। সোমবার বিশ্ব ব্যাংক তাদের সেমি অ্যানুয়াল গ্লোবাল প্রসপেক্ট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হলেও চীন এটি মোকাবিলায় এগিয়ে থাকবে। মহামারির মধ্যেও চীনের অর্থনীতি ১ শতাংশ হারে বাড়তে পারে।
বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বিশ্বজুড়ে যে মহামারি শুরু হয়েছে, তাতে বিপুল সংখ্যক মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। কোভিডের ধাক্কায় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির বহু কোটি মানুষ ফের দারিদ্রসীমার নিচে চলে গিয়েছেন। তার ফলে চলতি আর্থিক বছরে বিশ্বজনীন জিডিপি তথা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ৫.২ শতাংশ হারে সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছিল, বিশ্বজনীন জিডিপি ২.৫ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে মহামারি সব হিসাব উলোটপালট করে দিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস, গত ১৫০ বছরের ইতিহাসে চতুর্থবার মহামন্দা গ্রাস করতে চলেছে দুনিয়াকে। ১৯১৪, ১৯৩০-৩২, ১৯৪৫-৪৬ সালের পর চতুর্থবার বিশ্ব অর্থনীতি এত তীব্র সঙ্কটে পড়েছে। তবে বিশ্ব ব্যাংকের মতে, ঘুরে দাঁড়াতেও বেশি সময় নেবে না উন্নয়নশীল দেশগুলি। ২০২১ সালে ফের বৃদ্ধির পথে হাঁটার আশা রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির। বৃদ্ধির হার তখন ৪.২ শতাংশ হতে পারে
বিশ্ব ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিইলা পাজারবাজিওগ্লু সোমবার টেলিফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৮৭০ সালের পর এই প্রথমবার মহামারীর কারণে গভীর মন্দায় চলে গেল বিশ্ব অর্থনীতি। যে পরিমাণ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। মাথা পিছু আয় কমে যাওয়ায় ৭ থেকে ১০ কোটি মানুষ অতিশয় দারিদ্রের মধ্যে পড়তে পারেন।’
সিইলা জানিয়েছেন, উন্নত দেশগুলির অর্থনীতি ৭ থেকে ৯.১ শতাংশ হারে সংকুচিত হতে পারে। বিশেষ করে ইউরো অঞ্চলে সেই আশঙ্কা প্রবল। উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলির সংকোচন হতে পারে ২.৫ শতাংশ হারে।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে, যেসব রাষ্ট্রে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল, যারা বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল, এবং বৈদেশিক বাণিজ্য, রফতানি ও পর্যটনের উপরে যেখানে অর্থনীতি দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেই দেশগুলিতে মন্দার ধাক্কা সবথেকে বেশি হবে।