সীমিত মুসল্লি নিয়ে হজের পরিকল্পনা সৌদির!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সীমিত মুসল্লি নিয়ে হজ / ওমরাহ
প্রতীকী ছবি

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে হাজীদের সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত করে এ বছরের হজের পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাখ পার হওয়ায় এর সংক্রমণ রোধ করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।

সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৫ লাখের বেশি মুসলিম প্রতিবছর মক্কা-মদিনায় সপ্তাহব্যাপী চলা হজে অংশগ্রহণ করেন। সামর্থবান মুসলিমদের জন্য হজ আদায় করা ফরজ। সৌদির সরকারি তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর হজ ও ওমরাহ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার আয় করে সৌদি।

সৌদি কর্তৃপক্ষ করোনা সংক্রমণ রোধ করতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ওমরাহ বন্ধ রেখেছে। এছাড়া হজের সিদ্ধান্তও পরে জানানো হবে বলে আগেই জানিয়েছিল দেশটি।

সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, করোনার কারণে বয়স্কদের হজ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, অতিরিক্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ কঠোর নীতি অবলম্বন করে অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক লোক নিয়ে হজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেয়া হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ চিন্তা করছে যে, প্রতিটি দেশ থেকে প্রতিবছর কোটাভিত্তিক যত লোক হজ করে, এ বছর প্রত্যেক দেশ থেকে নিয়মিত কোটার ২০ শতাংশ লোককে হজের অনুমতি দেয়া হতে পারে।

এই তিনটি সূত্রই জানিয়েছে, এখনো কয়েকজন কর্মকর্তা হজ বাতিলের পক্ষে চাপ দিচ্ছেন। এই বছরের হজ জুলাইয়ের শেষদিকে শুরু হবে।

যদিও এই বিষয়ে সরকারী মিডিয়া অফিস এবং হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি। হজের সীমাবদ্ধতা ও তেলের দাম কমে যাওয়ায় সৌদি অর্থনীতি চাপের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত মার্চ মাসে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞারোপ করে সৌদি। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার জেদ্দায় পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। জেদ্দার এয়ারপোর্টেই হজের ফ্লাইটগুলো অবতরণ করে।

২০১৯ সালে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করেন। একই বছরে ২৬ লাখ লোক হজে অংশ নিয়েছিলেন। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনায় রয়েছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে উমরাহ ও হজের ধারণক্ষমতা বাৎসরিকভাবে ৩ কোটিতে বৃদ্ধি করা এবং ২০৫০ সালের মধ্যে এই পরিমাণ ৫ কোটিতে বৃদ্ধি করা।

বিভিন্ন কারণে হজ বাতিলের ইতিহাস রয়েছে। প্রথমবার বাতিল হয়েছিল ৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে। এরপর বন্ধ হয়েছিল ৯৩০ সালে হামলার কারণে। সেসময় হামলাকারীরা হাজরে আসওয়াদ বাহরাইনে নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে হাজরে আসওয়াদ পুনরুদ্ধার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এক দশক হজ বন্ধ ছিল। এরপর ৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ বন্ধ ছিল।

শুধু যুদ্ধ-বিগ্রহ না, মহামারীর কারণেও হজ বাতিল হয়েছিল। প্রথমে ১৮১৪ সালে হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে ৮,০০০ মানুষ মারা যাওয়ায় হজ বাতিল করা হয়।

এরপর ১৮৩১ সালে ভারত থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের মাধ্যমে মক্কায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং চারভাগের তিনভাগ হাজী মৃত্যুবরণ করে। ফলে সে বছর হজ বাতিল করা হয়। এছাড়াও ১৮৩৭ থেকে ১৮৫৮ সালের মধ্যে প্লেগ এবং কলেরার কারণে হজ বন্ধ ছিল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে