কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হল করোনাকালের বাজেট অধিবেশন

সংসদ প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ফাইল ছবি

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে করোনাকালের বাজেট অধিবেশন। আজ বুধবার বিকেল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের এই বাজেট ও অষ্টম অধিবেশন শুরু হয়।

এদিন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত থাকলেও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সংসদে যাননি। যদিও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সংসদে উপস্থিত সবাইকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে সংসদ ভবন ছাড়াও অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে নির্ধারিত এমপিদের সংসদে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

এজন্য যারা আজ যাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত শুধু তারাই অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। এসময় সবাই মাস্ক পরেছিলেন। সবার তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। অসুস্থ ও বয়স্ক এমপিরা সংসদে যাননি।

তবে করোনা হটস্পট হিসেবে দেখা দেয়া জাতীয় সংসদের বাজেট ও অষ্টম অধিবেশন নিয়ে এমপি ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কিন্তু বাজেট অধিবেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই ভয় নিয়েই অধিবেশনে যাবেন স্বল্পসংখ্যক এমপি-মন্ত্রী। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বাজেট উপলক্ষে সংসদের কর্মকর্তাদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার পর ৮ জুন পর্যন্ত ৪৩ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। তারও আগে সংসদ সচিবালয়ে দায়িত্বরত ৮২ জন ব্যাটালিয়ন আনসার ও তিনজন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হন। এছাড়া এ পর্যন্ত ৮ জন মন্ত্রী-এমপিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সবার মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

এ বিষয়ে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই সংসদ অধিবেশন নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। সংসদের অধিবেশন কক্ষ একটি বন্ধ কক্ষ। সেখানে বাইরের আলো বাতাস ঢুকার কোনো ব্যবস্থা নেই। সেন্ট্রাল এসিতে চলে। এজন্য আমি ভার্চুয়াল অধিবেশন করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু সেটা গ্রহণ করা হয়নি। তারা সংবিধানের কথা বলে। কিন্তু ডকট্রিন অব নেসেসিটি (doctrine of necessity) বলে একটা কথা আছে। প্রয়োজনের রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ নিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে অধিবেশন চালানো যেত।’

এছাড়াও সংসদের অনেক কর্মকর্তা আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। তাদের মন্তব্য, সরকারি চাকরি করি, আদেশতো মানতেই হবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, দেশের স্বার্থেই কাজ করতে হবে।

জানা যায়, অধিবেশন শুরু ও বাজেট পেশের দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদের বৈঠক বসবে। আর দেড়টা পর্যন্ত অধিবেশ চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেল ৩টায় সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরু হবে। এরপর বাজেট ও অর্থ বিল উত্থাপন হবে। ১২ ও ১৩ জুন সংসদের বৈঠক মুলতবি রাখা হবে। ১৪ জুন রোববার সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা। এদিন থেকে প্রতিটি কার্যদিবস সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলবে।

১৫ জুন সোমবার সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা, নির্দিষ্টকরণ সম্পূরক বিল পাস। ১৬ জুন মঙ্গলবার ও ১৭ জুন বুধবার মূল বাজেটের ওপর আলোচনা।

১৮ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি। ২২, ২৩ ও ২৪ জুন বাজেটের ওপর আলোচনা। ২৫ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি। ২৯ জুন বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনা এবং অর্থবিল পাস। ৩০ জুন মূল বাজেট, ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস। ৮ অথবা ৯ জুলাই অধিবেশন সমাপ্তি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে