বাজেট জনবান্ধব হয়নি: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

গতানুগতিক বাজেট কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে করোনকালে ‘বিশেষ করোনা বাজেট’ ঘোষণা প্রয়োজন ছিল দাবি করে প্রস্তাবিত বাজেটকে অবাস্তবায়নযোগ্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে দাবি করেছে বিএনপি। এই বাজেট জাতিকে হতাশ করেছে বলেও দাবি দলটির।

শুক্রবার বিকালে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মন্তব্য করেন।রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে বাজেটের ওপর দলের পক্ষ থেকে ভার্চুয়াল প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি মহাসচিব।

universel cardiac hospital

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আমাদের সুপারিশ ও দেশের অধিকাংশ শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের অভিমতকে উপেক্ষা করে প্রত্যাশিত ‘অসাধারণ বাজেটের’ স্থলে নিতান্তই একটি সাধারণ বাজেটের ঘোষণা দিলেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’ শিরোনামের এই বাজেট প্রকৃত অর্থে একটি অন্তঃসারশূন্য কল্পনাপ্রসূত কথার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়। বাজেট জনবান্ধব হয়নি। বর্তমান সরকারের কাছ থেকে অবশ্য এর বেশি কিছু আশা করেও লাভ নেই, কারণ জনগণের কাছে এদের কোনো জবাবদিহিতা নেই ‘

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যাশিত অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। বিদ্যুৎখাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।অন্যদিকে মোবাইলে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়ানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করে আগের মতো খরচ রাখার দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা সংকটের কারণে জাতি আজ এক মহাদুর্যোগকাল অতিক্রম করছে। মানুষের জীবন ও অর্থনীতিকে এ মহাসংকট থেকে উদ্ধারের জন্য যেখানে প্রয়োজন ছিল প্রথাগত গতানুগতিক বাজেট কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে একটি ‘বিশেষ করোনা বাজেট’ তা না করে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার একটি গতানুগতিক অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট ঘোষণা করেছেন। এ বাজেট জাতিকে হতাশ করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত ৯ জুন বিএনপির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পুনরুদ্ধার পরিকল্পনাসমৃদ্ধ তিন বছরের একটি মধ্যমেয়াদি বাজেট রূপরেখা দিয়েছিলাম। অর্থমন্ত্রী আমাদের সুপারিশ ও দেশের অধিকাংশ শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের অভিমতকে উপেক্ষা করে একটি সাধারণ বাজেটের ঘোষণা দিলেন।’

তিনি বলেন, ‘এই বাজেটে করোনা কাটিয়ে একটি টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তোলার কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই। বাজেটে বর্তমানে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কার্যকর সুশাসন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বস্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। জাতি আশা করেছিল এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া হবে। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে অর্থমন্ত্রী স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা, বরাদ্দ যাই হোক না কেন প্রয়োজন স্বচ্ছ দুর্নীতিমুক্ত ব্যবহার। সে বিষয়ে বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে প্রকৃত অর্থে কোনো গঠনমূলক ব্যবস্থা কিংবা সংস্কার প্রস্তাবও নেয়া হয়নি। এমনকি যেসব প্রকল্প নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে সেই প্রকল্পগুলোকেই সরকারের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে দেখানো হয়েছে।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে