প্রস্তাবিত বাজেটে আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থপাচার করলে ৫০ শতাংশ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
১১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থপাচার ও কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের অর্থপাচার ও কর ফাঁকির বিষয়ে সরকারের অবস্থান কঠোর। এ প্রবণতা রোধকল্পে বিদ্যমান অন্যান্য সকল বিধানাবলীর পাশাপাশি আয়কর অধ্যাদেশে একটি নতুন ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে পাচার হবে, যে পরিমাণ প্রদর্শিত বিনিয়োগ ভুয়া হিসাবে প্রমাণিত হবে তার ওপর ৫০ শতাংশ হারে কর আরোপিত হবে। আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ চার ও কর ফাঁকি রোধে প্রস্তাবিত বিধান অত্যন্ত ফলপ্রসু হবে বলে আশা করছি।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলতি অর্থবছরে অনেকগুলো অভিযান পরিচালিত হয়েছে যা সর্বমহলে সমাদৃত হয়েছে। দুর্নীতির বিষবৃক্ষ সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলে দেশের প্রকৃত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সুশাসন ভিত্তিক প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করতে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে। কমিশনের কাজ গতিশীল ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের জুনে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা’ সংশোধন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমনে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে স্থবির দেশের অর্থনীতি। এ পরিস্থিতিতে টিকে থাকা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশায় ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এর আকার পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যে জরুরি এবং অপ্রত্যাশিত খরচ দেখা দিয়েছে তা মেটাতে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশায় আগামী বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে ৪৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে এ ঘাটতি মেটানো হবে। এ হার গত বাজেটে ছিল জিডিপির ৫ শতাংশ।