জাতিসংঘের ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স বিষয়ক গ্রুপ অব ফ্রেন্ডসের স্টিয়ারিং কমিটিতে সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার বাংলাদেশ এ কমিটিতে যোগ দেয়। মিসরের পরিবেশমন্ত্রী ড. ইয়াসমিন ফুয়াদ ও যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ব্যারনেস সাগ আহ্বায়ক হিসেবে গ্রুপটির উদ্বোধন করেন।
স্টিয়ারিং কমিটির অন্য সদস্যরা হলো নেদারল্যান্ডস, মালাওয়ি ও সেন্ট লুসিয়া।
এ প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো জলবায়ু অভিযোজন, এ সংক্রান্ত সংকট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন, কার্যকরী দৃষ্টান্ত ও উল্লেখযোগ্য মাইলফলক নিয়ে আলোচনা করতে পারবে।
এছাড়া অংশীজন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকেও নানা ধারণা গ্রহণ করার সুযোগও থাকবে এ প্ল্যাটফরমে। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট’-এর অঙ্গীকার ও গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করাসহ ইউএনএফসিসিসি’র (ইউনাইটেড নেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) নেগোসিয়েশন সংক্রান্ত কাজেও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস।
উল্লেখ্য, ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে বাংলাদেশ জলবায়ু ক্ষেত্রে অভিযোজন ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরে এবং তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও অনুঘটক হিসেবে নানা উদ্যোগ নেয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরইএপি (রিস্ক-ইনফরমড আর্লি অ্যাকশন পার্টনারশিপ) শীর্ষক বৈশ্বিক পদক্ষেপের উদ্বোধন করেন।
ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স বিষয়ক গ্রুপ অব ফ্রেন্ডসের এ ভার্চুয়াল উদ্বোধনীতে অংশগ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ জলবায়ু-নাজুক দেশগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার ক্ষেত্রে ‘অভিযোজন’ ও ‘ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন’ হল মূল বিষয়। বৈশ্বিকভাবে ‘অভিযোজন ও সামর্থ্য অর্জন’ প্রচেষ্টাগুলোয় আরও বেশি অর্থায়ন এবং প্রযুক্তির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং অর্থমন্ত্রীদের ‘দ্য ভারনারেবল-২০ (ভি-২০)-এর ২০২০-২০২২ মেয়াদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে বলে জানান উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি। জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশেষ করে অভিযোজন ও জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন বিষয়ে বাংলাদেশ সিভিএফ এবং ভি-২০ এর মাধ্যমে বৈশ্বিক সব ফোরামে যথোপযুক্ত প্রচেষ্টা গ্রহণ করে যাবে বলেও জানান তিনি।
শক্তিশালী পূর্ব-সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, দুর্যোগ মোকাবেলা প্রস্তুতির অনুশীলন, সুদৃঢ় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি, খরা-লবণাক্ততা সহিষ্ণু শস্যজাত উদ্ভাবন ও ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০ এর মতো বাংলাদেশের অভিযোজনমূলক উদ্যোগের বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের ধারণা দেন মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি।
জাতিসংঘের উপমহাসচিব আমিনা মুহাম্মদ এবং ইউএনডিপির প্রশাসক আখিম স্টেইনার উদ্বোধনীতে অংশ নেন এবং নতুন এই গ্রুপটিকে স্বাগত জানান। জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে এ ফোরাম তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। গ্রুপটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তারা।