সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেয়ার অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় শনিবার রাত ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে তাজহাট থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মুহিব্বুল ইসলাম।
এর আগে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু মোন্নাফ আল কিবরিয়া তুষার বাদী হয়ে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেছিলেন। তবে তা রেকর্ডভুক্ত না করে পরে রেজিস্ট্রারের মামলায় ওই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার দেখানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ তুষার কিবরিয়া।
জানা যায়, শনিবার (১৩ জুন) লাইফ সাপোর্টে থাকা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। তার মৃত্যুতে ওই শিক্ষিকা নিজের ফেসবুক আইডিতে ব্যঙ্গ করে একটি পোস্ট দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষয়টি বুঝতে পেরে তা ডিলিট করেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে পোস্টের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানান। পরে রাত ১০টার কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি ভুল করেছেন স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে পরপর দুইটি স্ট্যাটাস দেন শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি আবু মোন্নাফ আল কিবরিয়া তুষার বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমি মামলার এজাহার রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় জমা দিয়েছি। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ওই শিক্ষিকাকে থানায় আনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন এসে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়। পরে রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
তিনি বলেন, ওই শিক্ষিকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় বাম রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেইসময় সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। এসব জানার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে নিয়োগ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে আমরা যখন শোকাহত তখন ওই শিক্ষিকার এমন অশোভন পোস্ট আমাদের ব্যথিত করেছে। ওই শিক্ষিকার নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সুতরাং এর দ্বায় প্রশাসন এড়াতে পারে না।
এ বিষয়ে জানতে শনিবার রাত সোয়া একটার দিকে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।