অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, এবারের বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। মানুষ না থাকলে বাজেট কার জন্য। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে আমাদের বাঁচাতে হবে। এবারের বাজেট মানবিক বাজেট।
অর্থমন্ত্রী করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাজেট বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সোমবার (১৫ জুন) সংসদে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বছর বাজেটের সংযোজন-বিয়োজন বা সমন্বয়ের কারণটি আমাদের সকলের জানা। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর বিবেচনায় আমরা সম্পূরক বাজেটে রাজস্ব আয় ও ব্যয় কিছু সমন্বয় করার চিন্তা করেছি। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও আমরা ৮.২ শতাংশ কমিয়ে ৫.২ শতাংশ নির্ধারণ করেছি। আমরা যদি এই পুনর্নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি তা হবে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ।
তিনি জানান, সম্পূরক বাজেট করোনাদুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যসেবা খাত, স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে অতিরিক্ত তিন হাজার ৬০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
বাজেট না দেয়া হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ তোলার কোনো ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের এবারের (আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছর) বাজেটে সকল বিষয়ে প্রাধিকার পাচ্ছে দেশের মানুষ। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। এই করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে আমাদের চেষ্টা থাকবে মানুষকে যতটা সম্ভব রক্ষা করা। আল্লাহর অশেষ রহমত থেকে আমরা সেই কাজটি করব।
নতুন অর্থবছরের বাজেট সকলের জন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবসময় আমাদের বাজেটে অর্থনৈতিক উন্নয়নগুলোর কম্পোনেন্ট প্রাধিকার পায় কিন্তু এবার আমরা তা করিনি। এবার মানুষকে প্রাধিকার দিয়েছি। এটা কেবল অর্থনৈতিক বাজেট নয়। এটা একদিকে অর্থনৈতিক বাজেট পাশাপাশি মানবিক বাজেট।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের গ্রামে যেতে বলেছেন। গ্রামের অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। গ্রামের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। তাদের দায়িত্ব নিয়ে আমরা বাজেট প্রণয়ন করেছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্যবার আমরা রেভিনিউ অর্জন করি এবং রেভিনিউ খরচ করি। এবার আমরা রেভিনিউ আগে খরচ করব তারপর রেভিনিউ অর্জন করব। আমরা এখন খরচ না করলে মানুষ বাঁচবে কী করে? আর মানুষকে বাঁচাতে না পারলে দেশ কার জন্য? দেশের বাজেট কার জন্য? কাজেই এই বিবেচনা মাথায় রেখে আমি সবাইকে অনুরোধ করব আসুন সবাই আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই বাজেট যেন পরিচালনা করি। এই বছরটি একটি ভিন্ন বছর। করোনাভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হলে সবাইকে সবাইকে নিয়ে কাজটি করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী ছাড়াও সম্পূরক বাজেট নিয়ে পাঁচজন সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। তারা হলেন- সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী, তাহজীব আলম সিদ্দিকী ও ওয়াসিকা আয়েশা খান এবং বিএনপির হারুন-অর-রশিদ। এবার সম্পূরক বাজেট নিয়ে মোট ৭০ মিনিট আলোচনা হয়। সোমবার একদিনই সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা করে এটি পাস করা হয়।