এমপি পাপুলের ৪ সহযোগীর সম্পদের খোঁজে দুদক

মত ও পথ প্রতিবেদক

দুদক
ফাইল ছবি

অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের চার সহযোগীর সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৈধ আয়ের বাইরে নামে-বেনামে বিপুল অবৈধ সম্পদ থাকা পাপুলের স্থানীয় চার সহযোগী হলেন- লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জামশেদ কবীর বাকিবিল্লাহ, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগ সভাপতি এসএম সালাহউদ্দিন টিপু, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ সদস্য শাখাওয়াত হোসেন আরিফ এবং লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুদ্দিন চৌধুরী নয়ন।

universel cardiac hospital

গতকাল সোমবার দুদক কার্যালয় থেকে তাদের সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। দুদক সূত্র থেকে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়।

দুদকের সূত্রটি জানায়, এই চারজনই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাপুলের জন্য কাজ করেছেন। পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার সম্পদ খোঁজার পাশাপাশি এবার ওই চারজনের সম্পদেরও খোঁজ নেবে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

সূত্রটি আরও জানায়, চারজন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাপুলের জন্য কাজ করার বিনিময়ে বেআইনি সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়া তারা পাপুলের সহযোগী হয়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকও হয়েছেন। যে কারণে পাপুলের পাশাপাশি দুদক এই চারজনের সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায়।

দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে চারজনের সব সম্পদের তথ্য চেয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, নোয়াখালী সাব রেজিস্ট্রি অফিস, লক্ষ্মীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা পরিচালক প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘দুদকের অনুসন্ধান একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাদেরকে বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছে বলে জেনেছি। এর বেশি বিস্তারিত কিছু এখনও জানি না।’

এর আগে গত ৯ জুন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিনের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টিআইএন নম্বর, আয়কর রিটার্নসহ ব্যক্তিগত সব নথিপত্র তলব করা হয়।

কুয়েতি আদালতে পাপুলের প্রতিষ্ঠানের পাঁচ কর্মীর দেয়া সাক্ষ্য অনুসারে জানা যায়, ‘কুয়েত আসার জন্য তারা পাপুলকে তিন হাজার কুয়েতি দিনার করে দিয়েছেন। এ ছাড়া প্রতি বছর আকামা নবায়নের জন্য তারা পাপুলকে ৩০০ দিনার প্রদান করেন।’

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। আর গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

সম্প্রতি মানব ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ কয়েকশ ব্যক্তির তালিকা করে কুয়েত সরকার। সেই তালিকা ধরেই বিতর্কিত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ। সেই অভিযানে গ্রেপ্তার হন এমপি পাপুল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে