কুয়েতে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে অর্থপাচার এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দিয়েছে দুদক।
মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে গত ৭ জুন কুয়েতে গ্রেপ্তার হয়েছেন আলোচিত এই সাংসদ। কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, পাপুল দেশে এলে যেন বিদেশ যেতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি বিদেশে অবস্থান করে তাহলে সে বিষয়েও আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশনে পাঠানো চিঠিতে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার অনুরোধ জানিয়েছে দেশের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।
ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, পরিবারসহ সংসদ সদস্য পাপুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুদকের কোনো চিঠি ইমিগ্রেশন পুলিশ এখনো পায়নি। চিঠি পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য (পরিচালক) জানান, চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদকের কাছে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার তথ্য থাকায় এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের এ পরিচালকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে লোন বরাদ্দ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করে বিদেশে পাচার এবং শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্মদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দুদক অনুসন্ধান করছে।
পাপুল কুয়েতে গ্রেপ্তরের পর গত ৯ জুন বাংলাদেশে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের পাঠানো চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টিআইএন নম্বর, আয়কর রিটার্নসহ ব্যক্তিগত সব নথিপত্র তলব করা হয়। কিছু নথি দুদকে পৌঁছলেও বেশকিছু অত্যাবশ্যক নথিপত্র পায়নি সংস্থাটি। সেজন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।