আটলান্টায় কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে সেই পুলিশের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইনসেটে কৃষ্ণাঙ্গ রেশার্ড ব্রুকস
ইনসেটে কৃষ্ণাঙ্গ রেশার্ড ব্রুকস। ছবি : ইন্টারনেট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় কৃষ্ণাঙ্গ রেশার্ড ব্রুকস হত্যার ঘটনায় গুলিবর্ষণকারী পুলিশ কর্মকর্তা গারেট রোলফের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাঞ্ছনার অভিযোগ আনা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে বরখাস্ত হওয়া গারেট রোলফের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, রাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা ডেভিন ব্রসনান এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় সময় সাড়ে ১০টার দিকে ওয়েন্ডিজ নামে একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর সামনে রেশার্ড ব্রুকসকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। রেশার্ড ব্রুকসকে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে ব্রুকসের সঙ্গে দুই পুলিশকর্মীকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গেছে। তাদের হাত ছাড়িয়ে পালাতেও দেখা গেছে ব্রুকসকে। তাতে তাকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার শব্দও শোনা গেছে।

জর্জিয়ার তদন্ত ব্যুরো বলেছে, গত শুক্রবার ওয়েন্ডির রেস্টুরেন্টের সামনে অপেক্ষা করার সময় গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ব্রুকস। গাড়িটির কারণে রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফোনে পুলিশকে অভিযোগ জানান এর এক কর্মী।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্রুকসের মাদক পরীক্ষা করে। এ সময় তিনি মাদক সেবন করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। পরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে মারা যান এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক।

এর পরপরই ব্রুকসের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে শত শত মানুষ। শনিবার সন্ধ্যার দিকে আটলান্টার ইন্টারস্টেট-৭৫ এলাকার একটি প্রধান মহাসড়ক বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। যে রেস্টুরেন্টে পুলিশের গুলিতে মারা যান ব্রুকস, সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।

এদিকে আটলান্টায় পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ রেশার্ড ব্রুকসের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে ঘোষণা দিয়েছে ফুল্টন কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনারস অফিস। পিঠে দুটি গুলি লাগায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

রোববার ময়নাতদন্তকারী এক কর্মকর্তা বিবৃতিতে জানান, ব্রুকসের মৃত্যুর প্রক্রিয়া পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন আটলান্টার পুলিশ প্রধান এরিকা শিল্ডস।

গত ২৫ মে মিনিয়াপোলিসে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ। এরপর থেকে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির প্রত্যেকটি শহর-অঙ্গরাজ্য ছাড়িয়ে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাকেও হত্যা করা হয়েছে বলে উঠে এসেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে