ভারত ও চীন দুই দেশের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশের। তবে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে বলা হয়ে থকে অতি ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে। আয়তনে ও জনসংখ্যায় বৃহৎ দেশ ভারত ও চীনের মধ্যে এখন চরম উত্তেজনা চলছে লাদাখ সীমান্তে সেনা সংঘর্ষের জেরে। এই পরিস্থিতিতে চীন শুল্কছাড়ের উপহার দিয়ে বাংলাদেশকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গত সোমবার লাদাখে ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত ও অর্ধশতের মতো আহত হয়। চীনের ৪৩ জন আহত হয়েছে বলে ভারত দাবি করলেও চীনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কিছু বলা হয় নই। সংঘর্ষে দুই পক্ষ রট ও লাঠিসোটা ব্যবহার করে।
এদিকে ভারতের আরেক প্রতিবেশী নেপাল দুই দেশের সীমান্তের অমীমাংসিত একটি অংশ নিজেদের দাবি করে তা তাদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেখানেও চীনের ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ ভারতের।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, লাদাখ সীমান্তের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরও ভারত যখন উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছে, তখন কয়েক হাজার পণ্য রপ্তানিতে শুল্কছাড়ের বিশাল প্রস্তাব নিয়ে ঢাকাকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বেইজিং।
গতকাল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের ৫ হাজার ১৬১টি পণ্য রপ্তানিতে ৯৭ শতাংশ শুল্কছাড়ের বিষয়ে রাজি হয়েছে চীন।
বেইজিংয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এক ভিডিও বার্তায় জানান, চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ চিঠি দিয়েছিল। চীনের স্টেট কাউন্সিলের ট্যারিফ কমিশন বাংলাদেশকে এ সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে ১৬ জুন একটি নোটিশ জারি করেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে চীনের কাছে শুল্কছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। আশ্চর্যজনকভাবে গত ১৬ জুন, অর্থাৎ লাদাখ সংঘর্ষের মাত্র একদিন পরেই বিষয়টিতে ইতিবাচক সাড়া দেয় বেইজিং। আগামী ১ জুলাই থেকে এ শুল্কছাড় কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটি বলবৎ থাকবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
এর ফলে এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় চীনে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত ৩ হাজার ৯৫টি পণ্য রপ্তানির তালিকায় আরও কয়েক হাজার পণ্য যোগ হচ্ছে।
শুল্কছাড়ের ফলে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠবে, যা নয়া দিল্লির জন্য বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র হলেও গত বছর জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় বাংলাদেশ।