এমপি পাপুল থেকে ঘুষ নেওয়া ব্যক্তিকে খুঁজছে কুয়েতি পুলিশ

ডেস্ক রিপোর্ট

কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল
কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। ফাইল ছবি

মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম (কাজী পাপুল) থেকে চেকের মাধ্যমে ১০ লাখ কুয়েতি দিনার ঘুষ নেওয়া ব্যক্তিকে খুঁজছে দেশটির পুলিশ। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে কুয়েতি প্রশাসন।

গতকাল রবিবার কুয়েতের ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

আরব টাইমসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশি সাংসদ সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িত দুইজন পলাতক সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি সংসদ সদস্যকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য চেকের মাধ্যমে ১০ লাখ কুয়েতি দিনার ঘুষ নিয়েছেন।

এছাড়া পাপুলের অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করতে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে আরব টাইমসের খবরে উঠে এসেছে।

এর আগে শনিবার আরব টাইসম জানায়, পাপুল ও তার কোম্পানির ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ফ্রিজ করতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর। যার মধ্যে ৩০ লাখই হচ্ছে পাপুলের প্রতিষ্ঠানের মূলধন।

ইতোমধ্যেই কুয়েতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর এ বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। যাতে ওই অর্থ অন্য কোথাও পাচার না হতে পারে।

এদিকে গতকাল রবিবার সাংসদ পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাব স্থগিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) প্রধান বরাবর ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দেশের গণমাধ্যমে খবর আসে।

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা।

কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।

পাপুলের বিরুদ্ধে ওঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।

গত ৭ জুন মানবপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে আটক করেছে কুয়েত সিআইডি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে