বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আবার রেকর্ড হয়েছে। এবার রিজার্ভের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৩৫ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। মাত্র তিন সপ্তাহ আগেই রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল।
তিন সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে আরো এক বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় কমার পরও রেমিট্যান্সপ্রবাহ এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের ওপর ভর করে রিজার্ভ এই নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ প্রথমবার ৩৫ বিলিয়নের মাইলফলক স্পর্শ করে। গতকাল বুধবার দুপুরে তা ৩৫ দশমিক ০৯ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৫০৯ কোটি ডলারে ওঠে।
এর আগে গত ৩ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৩৪ বিলিয়ন ডলার উচ্ছতায় ওঠে। তার আগে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ রেকর্ড ৩৩ বিলিয়ন ডলার উচ্চতায় ওঠে ২০১৭ সালের ২১ জুন। সেদিন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ৩০১ কোটি ডলার। এরপর কিছুটা কমলেও ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর, ২ নভেম্বর ও ২৮ ডিসেম্বর আবার ৩৩ বিলিয়ন ডলারে ফেরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম মত ও পথকে বলেন, ‘সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে বৈধপথে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান হিসেবেও বেশ কিছু পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হয়। আমদানি ব্যয়ের সম্প্রতিক গতিধারা বিবেচনায় নিলে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
করোনা ভাইরাসে লকডাউনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা অনেক প্রবাসীর আয় বন্ধ হয়ে যায়। আবার অচলাবস্থার কারণে অনেকে দেশে অর্থ পাঠাতে পারেননি। এসব কারণে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস রেমিট্যান্সের পরিমাণ অনেক কমে যায়। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় মে মাস থেকে রেমিট্যান্সে গতি ফিরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে ১৫০ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এ ছাড়া জুন মাসের ২২ দিনে প্রবাসীরা আরো ১৩৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। সব মিলিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাস ২২ দিনে (১ জুলাই-২২ জুন) এক হাজার ৭৭২ কোটি (১৭.৭২ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি।