রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন নিতে আরও শর্ত আরোপ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য বিদ্যমান আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এ জন্য ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন, ২০২০’ নামে খসড়া প্রস্তত করা হয়েছে। এ বিষয়ে চাওয়া হচ্ছে মতামত। এই মতামত দিতে হবে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে।
একযুগ আগে একটি নিবন্ধন শর্ত পূরণ করেই দল নিবন্ধন পেত। আগামীতে নিবন্ধন নিতে দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে। এ ছাড়া আইন হবে বাংলায়। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), পৌর ও সিটিকে বাংলায় পল্লী, নগর ও মহানগর রেখে নিবন্ধিত দল ও নাগরিকদের কাছে জনমত চাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক, যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইনের খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। আইনটি চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সুচিন্তিত মতামত প্রয়োজন। এ জন্য www.ecs.gov.bd ওয়েবসাইটে খসড়া আইনটি প্রকাশ করা হয়েছে। আর মতামত পাঠাতে হবে নির্বাচন কমিশন সচিবের ইমেইলে secretary@ces-gov.bd।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে দায়িত্বশীল ইসির উপসচিব আব্দুল হালিম খান জানান, মৌলিক বিধানাবলি অক্ষুণ্ন রেখে ইসির আইনগুলোকে ইংরেজির পরিবর্তে বাংলাভাষায় প্রণয়ণের উদ্যোগ নিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
এর অংশ হিসেবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) অনুচ্ছেদ ৯০ এ- ৯০ ইং পযন্ত বিদ্যমান আইনে না রেখে ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন’ নামে বাংলায় একটা খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। বাংলায় রূপান্তরকালে ইংরেজি ও বিদেশি শব্দের পরিবর্তে গ্রহণযোগ্য বাংলাভাষা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
ইসির সূত্র জানায়, বিদ্যমান আরপিওতে নিবন্ধন পেতে তিনটি শর্তের একটি পূরণ করলেই হতো। এবার বলা হয়েছে- শর্তাদির যে কোনো দুটি পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি নতুন বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে। নিবন্ধনের আবেদনের সময় থেকে পূর্ববর্তী দুটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে একটি আসন পেতে হবে।
বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যে কোনো একটি আসন পেলেই হবে (অন্তত একটি সংসদীয় আসন পেতে হবে, নির্বাচনে ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে, কেন্দ্রীয় অফিস এক তৃতীয়অংশ জেলা কমিটি ইত্যাদি)।
আর রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধি পূরণে দলগুলোর গঠনতন্ত্রেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে দলের গঠনতন্ত্রে একদলীয় ব্যবস্থা বা দলবিহীন ব্যবস্থা সংরক্ষণ বা লালন করলে নিবন্ধন অযোগ্য হবে।
প্রস্তাবিত আইনে সিটি করপোরেশনকে মহানগর, মেয়রকে মহানগর আধিকারিক; পৌরসভাকে নগর ও নগর সভা, মেয়রকে পুরাধ্যক্ষ বা নগরপিতা; কাউন্সিলরকে পরিষদ সদস্য; ওয়ার্ডকে মহল্লা; উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইসচেয়ারম্যানকে উপজেলা পরিষদের প্রধান-উপপ্রধান নামে বাংলায় প্রস্তাব করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদকে পল্লি পরিষদ করা হয়েছে বাংলায়।
যদি কোনো দল ইসির কাছে নিবন্ধিত থাকে; একই নামে কোনো দল নতুন করে আবেদন করতে পারবে না।
সিটি, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থিতার বিষয়টি প্রস্তাবিত আইনে যুক্ত করা হয়েছে।