ব্যাংকের পরিচালকের পদ হারালেন এমপি পাপুল

ডেস্ক রিপোর্ট

কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল
কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। ফাইল ছবি

অর্থ ও মানবপাচার এবং ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পরিচালক পদে থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান ও এনআরবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান পদ থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি।

ব্যাংকটির ১০০তম পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ।

universel cardiac hospital

কাজী পাপুল লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য। প্রতারণা, অর্থপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে গ্রেফতার করে। সর্বশেষ গত ২৪ জুন তাকে ২১ দিনের জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত এনআরবিসি ব্যাংকে ২০১৩ সালে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফরাছত আলী ছিলেন ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান।

ওই সময়ে তিনি বিভিন্ন দেশের বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের ব্যাংকটির পরিচালক করেন। এর মধ্যে কুয়েত প্রবাসী শহিদ ইসলাম ব্যাংকটির পরিচালক হন। আর বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ফরাছত আলী ব্যাংকটি থেকে বাদ পড়লে তমাল পারভেজ ও শহিদ ইসলাম ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেন।

ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার সময় পাপুল ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের দুই কোটি শেয়ারের মালিকানা কেনেন। বর্তমানে তার শেয়ার রয়েছে প্রায় দুই কোটি ৩২ লাখ। এটি ব্যাংকটির মোট শেয়ারের সাড়ে ৪ শতাংশ। তাকে পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকটিতে তার শেয়ার থাকবে।

জানা গেছে, কুয়েতে গ্রেফতারের পর সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পাপুল বা তার স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করে।

বিএফআইইউ তার অর্থ পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকেও তার বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। এ রকম অবস্থায় তাকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক (আরজেএসসি) এর তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি সাবেক পরিচালক সৈয়দ মুনসেফ আলীর কাছ থেকে ২০ লাখ, উদ্যোক্তা কানিজ ফারহানা রশিদ থেকে ৮৪ হাজার ৮০০, মইনুদ্দিন ইরতেজ সেকান্দার থেকে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫০ ও স্বামী শহিদ ইসলাম থেকে ১০ লাখ শেয়ার কিনেছেন সাংসদ সেলিনা ইসলাম। ব্যাংকটিতে শহিদ ইসলামের শেয়ার বেশি হওয়ায় প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন। নিজের স্ত্রীকেও ব্যাংকটির পরিচালক করতে কয়েক দফায় উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

পাপুল গ্রেফতার হওয়ার পর কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামে বরাত দিয়ে কুয়েত থেকে প্রকাশিত আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েত সরকারের তদন্তে বাংলাদেশ দূতাবাস কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে