স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন

সম্পাদকীয়

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নানারকম তর্কবিতর্ক চলছে। সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এক মাসে থাকা ও খাওয়াবাবদ ২০ কোটি টাকা খরচ দেখানোর প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটির বিপক্ষে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন বিভিন্ন মহল। যদিও বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগকে সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন। তাঁর বক্তব্যটি যদি সত্যও হয় তবু স্বাস্থ্য খাত যে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

শুধু ঢাকা মেডিকেল নয় এর আগেও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে একটি পর্দা কিনতেই ৩৭ লাখ টাকা দাম দেখানো, রংপুর মেডিকেল কলেজে যন্ত্রপাতি কেনার নামে সরকারের ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে বড় বড় দুর্নীতির তথ্য বহুবার গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এছাড়া এই খাতে ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী চক্র, পাস না করলেও মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়া চক্র, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলোর যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় সক্রিয় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম নতুন কিছু। তবে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে কারা কারা জড়িত সেটি চিহ্নিত করণের প্রয়াস এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়। মত ও পথ এর পক্ষ থেকে আমরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই খাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

universel cardiac hospital

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে স্বাস্থ্য খাত এখন পুরোপুরি প্রশ্নবিদ্ধ। এ খাতের দুর্বলতা এখন সর্বজন স্বীকৃত। এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হলে প্রথমেই স্বাস্থ্য খাতের যে দুর্নীতি আছে সেই দুর্নীতি দূর করতে হবে। এই দুর্নীতি দূর করার জন্য শুধু দুদক নয়, অন্যান্য সংস্থা যেগুলো আছে তারা এবং নিরপেক্ষ অডিটের মাধ্যমে পূর্বে যে টেন্ডারগুলো হয়েছে সেগুলো কীভাবে হয়েছে, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে কারা কারা জড়িত, সে রাজনীতিবিদ হোক কিংবা রাজনৈতিক কর্মী হোক অথবা ডাক্তার হোক, ইঞ্জিনিয়ারসহ যেই হোক সকলকেই তদন্তের আওতায় এনে পুরোপুরি একটি হিসাব নেওয়া উচিত। এটি করা গেলে নিশ্চিত হবে স্বাস্থ্য খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং আমাদের পক্ষে বড় কিছু অর্জন সম্ভব হবে। অন্যথায় আমরা যে অসুবিধায় আছি সে অসুবিধা আমাদেরকে আরও বড় ধরনের বিপদের দিকে নিয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে