রিজার্ভ থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

দেশে বর্তমানে রেকর্ড পরিমাণ ৩৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে। তিন মাসের আমদানি খরচ হাতে রেখে এই রিজার্ভ থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টির সম্ভাবনা যাচাই-বাছাই করে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটা যুগান্তকারী প্রস্তাব এসেছে প্রধামন্ত্রীর কাছ থেকে। আমরা এটাকে সমর্থন করি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা ভাবছি, সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের অর্থ জনগণের সঞ্চয় তাদের কল্যাণে ব্যয় হবে। এরজন্য যে নিয়ম-কানুন ও নীতিমালা প্রয়োজন সেগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) এবং অর্থমন্ত্রণালয় আছে তারা দেখবে। আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্যই সহায়তা করবো।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের পক্ষে অর্থ সংরক্ষণ করে। ওখান থেকে ঋণ নিতে পারি। বাংলাদশ ব্যাংক চিন্তা করবে কীভাবে এটা করা যায়। সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় হাতে রাখা সেইভ। সেটা যেকোনো অর্থনীতিতে। তিন মাসের আমদানি সমপরিমাণ টাকা থাকলে স্বস্তিদায়ক হবে। এখন যে রিজার্ভ আমাদের আছে সেটা তিন মাস নয়, এক বছরের আমদানির সমপরিমাণ। সুতরাং আমদানি ব্যায়ের যুক্তিসঙ্গত সংরক্ষণ রেখে বাকি টাকাতে আমাদের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মিটাতে পারি। নিজেদের অর্থ নিজেরা ব্যবহার করবো।’

পরিকল্পনামন্ত্রীকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, রিজার্ভ আমাদের একমাত্র ব্যাকআপ। রিজার্ভ থেকে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়াটাকে আপনি যৌক্তিক মনে করেন? জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি এটা মনে করি। আমি সমর্থন করি দুটো কারণে। একটি হলো আমাদের নিজস্ব টাকা ডান হাত থেকে বাম হাতে আনলাম। আবার ডান হাতে ফেরত দেব। এটা আগে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ফেরত যায়। এটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্বিতীয়ত, বিদেশ থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক শর্ত থাকে, এটা-সেটা থাকে, সেগুলো মানতে হয়। মানতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে যায়। ঋণচুক্তি সই করার পরে প্রক্রিয়া করতে অনেক সময় দেখা যায়, এক থেকে দেড় বছর পার হয়ে যায়। তখন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। ডলারের মান বেড়ে যায়, টাকার মান কমে যায়। আমাদের নিজেদের টাকা হলে নিজেরাই খরচ করবো। ভয়ের কারণটা হলো যে ডলারটা দেব, তা ফেরত আসতে হবে। এখানে যদি ওই ধরনের কোনো ভীতি থাকে, যেটা ব্যাংকে আমাদের নন পারফর্মিং (ঋণখেলাপি) ঋণের ক্ষেত্রে দেখেন। তাহলে আমি হাত দেব না। ওইটা নিশ্চিত হয়ে আমি করতে রাজি আছি। আমি মনে করি, এটা সম্ভব।’

রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে