স্বাস্থ্য খাতে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হবে : দুদক

মত ও পথ প্রতিবেদক

দুদক
ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি অভিযান আরও সক্রিয় হবে। জনগণের কল্যাণেই এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।

শুক্রবার কমিশনের এক বছরমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর দাখিল করা প্রতিবেদনের বিষয়ে এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে কমিশনের নিয়মিত অভিযান সাময়িক স্থগিত রাখা হলেও ত্রাণ চোর ও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দুদকের ১৮ জনের বেশি কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দুজন কর্মকর্তা মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যেও আপনারা মামলা করছেন, অপরাধীদের গ্রেফতার করছেন, অভিযোগসংশ্লিষ্টদের তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

‘দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, প্রসিকিউশন, প্রতিরোধসহ সব প্রকার দাফতরিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটা আপনাদের কৃতিত্ব।’

কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রয়োজনে বাসায় বসে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই নথির মুভমেন্ট রেজিস্টার অনুসরণ করতে হবে এবং তা কমিশনের সচিবকে অবহিত করতে হবে।

কমিশনের মানিলন্ডারিং অনুবিভাগের কার্যক্রমের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে কমিশনের ১১টি মানিলন্ডারিং মামলার সবকটিতেই অপরাধীদের সাজা হয়েছে। ২০১৮ সালেও শতভাগ মামলায় সাজা হয়েছিল। এককভাবে যখন দুদক মানিলন্ডারিং মামলা করত, তখন অসংখ্য মামলা দায়ের হয়েছে। অসংখ্য অপরাধীর শাস্তি হয়েছে।

ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, দেশের অর্থপাচার বন্ধ করতে হলে দ্রুত অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে অপরাধলব্ধ সম্পদ উদ্ধার করতে হবে। এক্ষেত্রে বিএফআইউ, সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ অন্যান্য সংস্থার মধ্যে নিবিড় সমন্বয় থাকতে হবে। কীভাবে এসব সংস্থার সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় করা যায়, তা কমিশনের কৌশলপত্রের আলোকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ভার্চুয়াল সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র বাস্তবায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এসব কর্মকর্তা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একটি দুর্নীতির খবরও কমিশনকে জানাননি। তাদেরও জবাবদিহিতা দরকার।

সৎ, স্বচ্ছ ও দৃঢ়চেতা কর্মকর্তাদের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, কমিশনের যে সব সততা সংঘ রয়েছে, তাদের কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে হবে। শুধু কমিটি করলে চলবে না।

দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালসহ এ জাতীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি দুদকের গোয়েন্দা নজদারি আরও বাড়াতে হবে। কারণ আমাদের কাছে প্রায়ই অভিযোগ আসছে-এসব প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সরকারি পরিষেবা প্রদান করছে না। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা শুরু হওয়ার আগে যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হতো, সেভাবেই অভিযান শুরু করা হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়র বখত, মহাপরিচালক আ ন ম আল ফিরোজ, মো. মফিজুর রহমান ভূঞা, মো. জহির রায়হান, মো. রেজানুর রহমান, সাঈদ মাহবুব খান, মো. জাকির হোসেন প্রমুখ।

সভাটি পরিচালনা করেন দুদকের আইসিটি ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে