বিশ্বজুড়ে করোনা বিপর্যয়ের ফলে শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছিল ইউনিসেফ। মাস খানেক আগে ‘ল্যান্সেট গ্লোবাল হেলথ’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয়, আগামী ৬ মাসে বিশ্বের ১১৮টি দেশে পাঁচ বছরেরও কম বয়সী প্রায় ২.৫ মিলিয়ন (২৫ লক্ষ) শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
ইউনিসেফের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিটা ফোর জানান, এই প্রথম সারা বিশ্বে এত শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে ইউনিসেফের উদ্বেগ প্রকাশের পর এবার শিশু-শিক্ষা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল একটি সমীক্ষায়। সম্প্রতি ‘দ্য ব্রিটিশ চ্যারেটি’র করা সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, করোনা বিপর্যয়ের ফলে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ কোটি (৯৭ লক্ষ) শিশু হয়তো আর কোনোদিন স্কুলে ফিরতে পারবে না! পারিবারিক আর্থিক সঙ্কট, আকস্মিক দারিদ্রের ফলে শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, এপ্রিল থেকে করোনা আতঙ্কের জেরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬০ কোটি শিক্ষার্থীর (বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ) পঠনপাঠন মাঝ পথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা শিক্ষার্জনের ক্ষেত্রে তারা চূড়ান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই উচ্চ শিক্ষার পাঠ মাঝ পথেই ছাড়তে হতে পারে।
সমীক্ষায় দাবি, ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলিতে সামগ্রিকভাবে শিক্ষাখাতে প্রায় ৫ লক্ষ ৮১ হাজার কোটি টাকার ঘটতি দেখা দিতে পারে, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে শিশু-শিক্ষার উপর।
এই সমীক্ষার রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, করোনা বিপর্যয়ের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে বিশ্বের বহু দেশ। এই অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রভাব পড়বে শিক্ষা ক্ষেত্রও। ফলে অনেক শিক্ষার্থীর পারিবারিক আকস্মিক আর্থিক সঙ্কট সামাল দিতে পড়াশুনা ছেড়ে উপার্জনের চেষ্টা শুরু করবে। অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবনতাও বাড়তে পারে এই সব পরিবারগুলিতে।