জনস্বার্থে ঈদে গণপরিবহন চলার অনুমতি, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে: কাদের

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ঈদে জনসমাগম এড়াতে গণপরিবহন বন্ধে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ সত্ত্বেও সরকার জনস্বার্থে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে, এ সময় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।

শনিবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সরকারি বাসভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্তের সংখ্যা একদিন কমলে আবার পরদিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, আসন্ন ঈদে সমাগম এড়ানো না গেলে সংক্রমণ উচ্চমাত্রায় পৌঁছে যাবে। তারপরও সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গণপরিবহন চলাচল অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাদের বলেন, গণপরিবহন চলার এ অনুমতি জনস্বার্থে, জীবন-জীবিকার স্বার্থে।

সরকার অনুমতি দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদযাত্রায় প্রত্যেককে সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, পশুর হাট, লঞ্চ- বাস- ট্রেন স্টেশন, ফেরিঘাট, শপিং মলসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সামাজিক দূরত্ব মানার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। মাস্ক পরিধান অবশ্যই করতে হবে। জীবনকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য জীবিকা অর্জনে চলাচল যেন জীবনহানির ঝুঁকিতে না পড়ে সেদিকে আমাদের সর্বোচ্চ খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ঈদে শুরু থেকেই একটি মহল সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করাকেই দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন হিসেবে ব্রত করে নিয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযান কে তারা সমর্থন ও সহযোগিতা না দিয়ে বরং অন্ধ সমালোচনা করছে। সরকার না কী পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে অনিয়মকারীদের।

মন্ত্রী বলেন, আমি জানতে চাই, আপনাদের সময় তো দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, ছিলো দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্য। তখন কি এ ধরনের একটি সাহসী উদ্যোগ নিতে পেরেছিলেন? পেরেছিলেন দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে কিছু করতে? পারেননি। যারা গ্রেনেড হামলার বিচার করতে গিয়ে জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছে, চলমান অভিযানকে নাটক বলে পরিহাস করা তাদের মুখেই মানায়। যারা নাটক সাজায়, নাটক করে যাচ্ছেন অব্যাহতভাবে- তারা সবকিছু তো নাটক দেখতে পাবেন- এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, চলমান অভিযান অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা স্বপ্রণোদিত হয়ে, নিজ উদ্যোগেই অভিযান পরিচালনা করছেন। কোনো দল বা মহল থেকে এসব অনিয়মের কথা আগে তুলে ধরা হয়নি। সরকারই উদঘাটন করেছে এবং কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এর থেকে বোঝা যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার আন্তরিক এবং কঠোর অবস্থান। শেখ হাসিনার কাছে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি প্রশ্রয় পাবে না। দুর্নীতিবাজদের, দুর্বৃত্তদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গুটিকয়েক মানুষের লোভ, প্রতারণা, চাতুর্যের কাছে জনসাধারনের আশা-আকাঙ্ক্ষা জিম্মি হতে পারে না। তাদের স্বপ্ন সাধনা ও দিনরাত পরিশ্রম বর্ণহীন হতে পারে না। শেখ হাসিনা সরকার এদেশের জনমানুষের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দেয়। তাই যারা জনস্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যক্তিস্বার্থ সুরক্ষার অপপ্রয়াস চালাবে যে ক্যাম্পাসেই অবস্থান করুক, তাদের রক্ষা নেই। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতেই হবে। সততা ও নিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে দল ও সরকার পরিচালনা করছে শেখ হাসিনা। এদেশের রাজনীতিতে সততার প্রতীক বঙ্গবন্ধু পরিবার। তাই সরকার ও শেখ হাসিনার অর্জন আমরা গুটিকয়েক ব্যক্তির লোভের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দিতে পারি না।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে