দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর উন্নয়নে ৩ হাজার ৯৬৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ‘প্রাইভেট ইনভেসমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এন্টারপ্রেনিয়ারশিপ (প্রাইড) ফর বেজা প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ খরচ করা হবে।
এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণের বাইরে বাকি ৩৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। ইতোমধ্যেই প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা।
তবে ওই সভায় পরামর্শকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যয় প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল পরিকল্পনা কমিশন। তাছাড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা না করাসহ বিভিন্ন অসঙ্গতি রয়েছে প্রকল্প প্রস্তাবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব বিশ্বব্যাংক ইউং-এর প্রধান মো. শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে জানান, সম্প্রতি এ ঋণটি অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক বোর্ড। এখন প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলেই সংস্থাটির সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে। এটি নন-কন্সেশনাল ঋণ। ইউরিবর (ইউরোপীয় ইন্টার ব্যাংক অফারর্ড ব্যাংক) হিসাবে ঋণটি নেয়ায় সুবিধা হয়েছে। এই ঋণের সুদের হার হবে ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সঙ্গে ইউরিবর এবং কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ এবং ফ্রন্ড অ্যান্ড ফি হিসেবে দিতে হবে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। চার বছরের রেয়াতকালসহ ৩৪ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে সরকারকে।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিল্পায়ন করে দ্রুত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন, ২০১০ অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার একর জমিজুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল।
এই অর্থনৈতিক অঞ্চকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়। এটি তৈরিতে বিশ্বব্যাংক ২০১৪ সাল থেকে বেজাকে সহায়তা দিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে বড় অঙ্কের এই ঋণ অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ১৫ জুন প্রস্তাবিত ‘প্রাইভেট ইনভেসমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এন্টারপ্রেনিয়ারশিপ (প্রাইড) ফর বেজা প্রজেক্ট’ নিয়ে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করে পাঠানো হলে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হবে। অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।