দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও চিকিৎসায় দুর্নীতি এবং অনিয়ম নিয়ে অব্যাহত বিতর্কের মধ্যে ঢাকায় আরও একটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘ঢাকা ট্রমা সেন্টার’ নামে বেসরকারি হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, শ্যামলীতে অবস্থিত হাসপাতালটির কোনো লাইসেন্স নেই এবং তদন্তে দেখা গেছে সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছিল।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ১৮ জুলাই হাসপাতালটি সরেজমিন পরিদর্শন করে নানাবিধ অনিয়ম পেয়েছে। এ সময় হাসপাতালের কর্মকর্তারা কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালটিতে উন্মুক্ত স্থানে মূল্য তালিকা টানানো হয়নি। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জনবলের ঘাটতি দেখা গেছে। চিকিৎসক অপারেশন করলেও তাকে সহায়তা করেন ওয়ার্ডবয় এবং নন-মেডিক্যাল লোকজন। হাসপাতালটির পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। বিপজ্জনকভাবে অক্সিজেন রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা প্রবল। পরিদর্শনকালে আইসিইউ বন্ধ পাওয়া যায়। এমন হাসপাতাল আইসিইউ পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নয়।
দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) ১৯৮২’অনুযায়ী হাসপাতালটির কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া, ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না, সাত দিনের মধ্যে তার সুস্পষ্ট জবাব দিতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির শুরু থেকেই স্বাস্থ্য খাতে চলছে নানা অব্যবস্থাপনা। করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইতিমধ্যে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতাল এবং গুলশানের সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিতর্ক ও চাপের মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল কালাম আজাদ গতকাল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।