সরকারের পদক্ষেপে দেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

মত ও পথ প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

সরকার মৎস্য খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করতে গিয়ে এই কথা বলেন তিনি।

universel cardiac hospital

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মৎস্য খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশের অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদুপানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ আমরা গ্রহণ করছি।

কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কর্মীরা যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপণন এবং রফতানি অব্যাহত রেখেছেন, এ জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রায় পৌনে পাঁচশত প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদুপানির মাছ রয়েছে। এছাড়াও চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্যসম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

মৎস্যচাষে গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করারও আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয় তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মৎস্যখাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রশংসা করে জানান, চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা-এর সাথে মাছকেও বাংলাদেশের রফতানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং মৎস্যসম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, বলেন শেখ হাসিনা।

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম প্রধানমন্ত্রীকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের নেয়া নানামুখি পদক্ষেপ ও অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, মৎস্য সেক্টরে গত ১১ বছরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বাড়তি প্রায় ৬৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বৃদ্ধি পেয়েছে মৎস্য চাষি ও মৎস্যজীবীদের আয়। মা-ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে আমরা কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করেছি; জাটকা আহরণে বিরত দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া অব্যাহত রয়েছে। ফলে, ইলিশের উৎপাদন ২০০৯ এর পরিমাণ থেকে দ্বিগুনের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়াও ওই সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে