করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দেশে-বাইরে মিলে পাঁচটি সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে। মহাদেশীয় পর্যায়ে বিশ্বের চলমান একমাত্র আসর এশিয়া কাপও স্থগিত আর সবশেষ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও। এর মধ্যে কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপের পরবর্তী দিন তারিখ ঠিক হলেও বাকি একটিরও ভবিষ্যত জানা নেই। কবে কখন হবে? কিংবা আদৌ হবে কি না? তাও জানা নেই।
তবে টাইগারদের বন্ধ হওয়া সিরিজ-সফরগুলোর ভেতরে শ্রীলঙ্কা সফর নিয়েই কথা হয়েছে বেশি। কারণ লঙ্কানদের সঙ্গে টাইগারদের তিন ম্যাচের যে টেস্ট সিরিজ খেলার কথা, সেটা আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ। তাই বিসিবির পক্ষ থেকে খেলার তাগিদ ছিল বেশি।
আর যেহেতু শ্রীলঙ্কায় করোনার প্রকোপ তুলনামূলক কম, সংক্রমণ এবং প্রানহানি বাংলাদেশের চেয়ে আনুপাতিকহারে অনেক কম- তাই লঙ্কানরাও বাংলাদেশকে নিয়ে সিরিজ আয়োজন করতে মুখিয়ে ছিল, এখনও আছে। ভেতরের খবর, শুধু লঙ্কান বোর্ডই নয় বাংলাদেশও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা ভাবছে এবং সেটা শুধু ভাবাভাবির পর্যায়ে নেই, দুই বোর্ডের শীর্ষপর্যায়ে কথাবার্তা চলছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উচ্চপর্যায়ের এক অতি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাকি সিরিজগুলো নিয়ে তেমন কোনো উচ্চবাচ্য নেই, তবে শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে আবার নতুন করে ভাবা হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি শ্রীলঙ্কায় দল পাঠানোর কথাও চিন্তা চলছে।
বিসিবির এক অতি নির্ভরশীল সূত্র জানিয়েছে, ঈদের পরই হয়তো শ্রীলঙ্কা সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। প্রসঙ্গত, বিসিবি বস নাজমুল হাসান পাপন প্রোস্টেটের অপারেশনের পর বর্তমানে লন্ডন আছেন। তিনি দেশে ফেরার পর বোর্ডসভায় বিষয়টি নিয়ে কথা এবং সিদ্ধান্ত হবে। তবে এখনকার খবর, বিসিবি আর লঙ্কান বোর্ডের মধ্যে কথা চালাচালি চলছে।
বোর্ডের দুই শীর্ষকর্তা আকরাম খান আর জালাল ইউনুস স্বীকার করেছেন শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা খুব করে ভাবছে বিসিবি। জাতীয় দলের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব যে স্ট্যান্ডিং কমিটির, সেই ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান মত ও পথকে জানিয়েছেন, ‘যেহেতু আমাদের আগামী কয়েক মাস তেমন কোনো খেলা নেই। তাই আমরা শ্রীলঙ্কা সফরে দল পাঠানোর কথা ভাবছি। সফর নিয়ে লঙ্কান বোর্ডের সঙ্গে কথা বলছি। বলতে পারেন, আমরা নীতিগতভাবে শ্রীলঙ্কা সফরের আপ্রাণ চেস্টাও করছি।’
একই কথা আরেক বোর্ড পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুসের মুখেও। তিনি মত ও পথকে নিশ্চিত করেছেন, বোর্ডের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ চলছে এবং জাতীয় দলের শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তবে দুজনের কেউই দিন তারিখ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। কারণ এখনও দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।
তবে আকরাম খানের কথায় মিলেছে পরিষ্কার আভাস, সব অবস্থা ও পরিবেশ বিবেচনা করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় শ্রীলঙ্কায় দল পাঠাতে পারে বাংলাদেশ। আর টাইগারদের সাথে লঙ্কানদের টেস্ট চ্যাম্পিয়ন শুরু হতে পারে অক্টোবরের প্রথম দিকে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের শ্রীলঙ্কা সফর হতে পারে দেড় মাসব্যাপী। প্রথমত করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রীলঙ্কা গিয়ে প্রথম ১৪ দিন পুরো দলকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। যেহেতু ম্যাচ প্র্যাকটিস একদমই নেই, তার ওপর তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ; তাই শ্রীলঙ্কা গিয়ে কোয়ারেন্টাইন শেষে একটি দুইদিনের প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার প্রস্তাবও দেবে বাংলাদেশ। তারপর মূল সিরিজে মাঠে নামা।
জানা গেছে, জাতীয় দলের অনুশীলন, দল গঠন এবং শ্রীলঙ্কা যাওয়ার সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে বোর্ডের অভ্যন্তরে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখে ঈদের কিছুদিন পর জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরুর সম্ভাবনাও খুব বেশি।