কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা ও সরবরাহ ঠিক রাখতে কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কেস-টু-কেস ভিত্তিতে এ চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।
বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। একই সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানির প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক শিল্পমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গঠিত টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গত ২০ জুলাই সভার সিদ্ধান্ত এবং স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কাঁচা চামড়ার চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য রপ্তানি নীতি ২০১৮-২০২১ এর অনুচ্ছেদ ৯ দশমিক ১৫ এ কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানিতে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে শিথিল করা প্রয়োজন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।”
দেশে সারা বছর যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার অর্ধেক হয় এই কোরবানির মৌসুমে। আর সেসব পশুর চামড়া ট্যানারি কেমন দামে চামড়া কিনবে, তা প্রতিবছর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত ঈদে আড়তদারদের কাছে ‘ন্যায্য মূল্য’ না পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় ও আবর্জনার ভাগাড়ে চামড়া ফেলে গিয়েছিলেন ফড়িয়ারা।
অড়তদারদের অভিযোগ ছিল, ট্যানারি মালিকরা তাদের দীর্ঘদিনের বকেয়া টাকা পরিশোধ করছেন না। ফলে তারা নতুন করে চামড়া কেনার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।
অন্যদিকে ট্যানারি মালিকদের অভিযোগ ছিল, ‘সিন্ডিকেট’ করে আড়তদাররা মাঠ পর্যায়ে চামড়ার দাম কমিয়ে দিলেও ট্যানারিগুলোর কাছে তারা সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া বিক্রি করছেন।
সেই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে এবার কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তের অনুমতি দেয়ার কথা জানাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানিতে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণের পরিপ্রেক্ষিতে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে উল্লিখিত চামড়া রপ্তানির আবেদন পর্যালোচনা ও সুপারিশ প্রদানের লক্ষে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, লেদার গুডস এন্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস এন্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধি রয়েছেন।