মুজিবাদর্শ ও শোক গাঁথা

সম্পাদকীয়

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

দুঃখ, বেদনা আর অন্তহীন শোক নিয়ে শোকের মাস আগস্ট আবার আমাদের জীবনে হাজির হয়েছে। শুধুমাত্র স্বাধীন বাংলাদেশের নয়, বাঙালির ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ড ঘটছিল এই মাসের ১৫ তারিখে। এটি মানবেতিহাসেরও অন্যতম নৃশংস হত্যাকান্ড। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবার হত্যা করে রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল একদল ঘৃণ্য হায়েনা, যাদের মধ্যে রাজনীতিবিদ আর সেনাবাহিনীর এক দলছুট ঘাতকদলও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছিল। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ভাবাদর্শে ফিরিয়ে নিতে, মুক্তিযুদ্ধের সুফলকে ও আদর্শকে মুছে ফেলতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। কারণ তারা জানত যে, বঙ্গবন্ধুক সশরীরে হত্যা না করতে পারলে রাষ্ট্র ক্ষমতা তাদের হাতে আসবে না এবং ভাবাদর্শগতভাবে তারা সফলকাম হবে না।

পনের আগস্টের ঘটনাবলির শুধুমাত্র একটা ঘৃণ্য দিকই উন্মোচিত হয়েছে। দলছুট সামরিক কর্মকর্তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের মুখামুখি করে শায়েস্তা করা সম্ভব হয়েছে। ঘাতকদের কেউ কেউ এখনও পর্যন্ত শাস্তি ভোগ না করলেও আদালতে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়ছে। কিন্তু রাজনীতিবিদদের চক্রান্তকে আজও অব্দি পুরোদস্তুর পাদপ্রদীপের আলোতে আনা সম্ভব হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগও তা করেনি। গতানুগতিকতার গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

ফলাফল রাজনীতিতে দুর্বত্তায়ন ও দুষ্টচক্রের দাপট। এ দাপটের কারণে সর্বত্র আজ অন্ধকারের কালো ছায়া। পনের আগস্ট পরবর্তী সীমিত আকারের প্রতিরাধ আন্দোলন সংগ্রামে যারা সেদিন ঘরে বসে বসে কাজ করেছে তারা আজও ঘরে বসে বসেই রাজা উজির মারছে। কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছে না। রাজনীতি এখন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাতে নেই। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র আর ধনিক-বণিকদর হাতে চলে গেছে রাজনীতি। রাজনীতির বাণিজ্যিকরণ হয়ে গেছে। পাকিস্তানি ধারায়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়েছে ক্রমান্বয়ে। তাই চারিদিকে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ বিদ্যমান।

এই সামগ্রিক অবস্থাটাই মুজিবাদর্শ বিরাধী। মুজিবাদর্শ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমদর্শী। দেশ চায় তাই মুজিবাদর্শের বাস্তবায়ন। শোকের মাসের দাবীও তাই। বাঙালির জাতীয় রাষ্ট্র হবে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন অর্থনীতির রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল তাই। সুতরাং আসুন সকলে মিলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয় যাই। এর অন্যথা বিপর্যয় ডেকে আনতে বাধ্য।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে