মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৩ হাজার ১৮৪ জন মানুষের করোনায় মৃত্যু হল। এ সময়ের মধ্যে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৬ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৪২ হাজার ১০২ জন। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৬ জন।
আজ সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
নাসিমা জানান, ৮১টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ২৩৮টি। পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ২৪৯টি। এতে ১ হাজার ৩৫৬ জন শনাক্ত হন। গত ২ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। গত ১ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছিল। এতে ৩ হাজার ৬৮২ জন শনাক্ত হন। আর গত ১৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৯২২জনের নমুনা সংগ্রহ করে ১৭ হাজার ৫২৭টির পরীক্ষায় ৪ হাজার ৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।
নাসিমার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঈদের ছুটির সময় থেকে গত কয়েকদিন যাবত নমুনা সংগ্রহ কম হচ্ছে। ফলে শনাক্তের সংখ্যাও আগের চাইতে কয়েকগুন কমেছে। করোনার ফি নির্ধারণের পর থেকেই নমুনা দিতে যেতে মানুষের আগ্রহ কমতির দিকে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবাইকে নমুনা দেয়ার জন্য আহ্বান জানান নাসিমা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। উৎসস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। দেশে ১১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৪ জনের করোনা পরীক্ষা করে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ১০২ জন। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ফ্রান্স ও কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।
দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৬ জন। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৫ জন মানুষ সুস্থ হলেন।
নাসিমা আরও জানান, এ সময়ের মধ্যে ৩০ জন মারা গেছেন। এর আগে ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট ৩ হাজার ১৮৪ জন মানুষ করোনায় প্রাণ হারালেন। ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৫০৪ জন পুরুষ ও ৬৮০ জন নারী করোনায় মারা গেছেন।
ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জিংক-ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।