সিনহা হত্যা : ওসি প্রদীপ পুলিশি হেফাজতে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

ওসি প্রদীপ কুমার দাস
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। ফাইল ছবি

সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে । সূত্র মতে, আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে পৃথক সূত্র মতে, সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসি (সদ্য প্রত্যাহার) প্রদীপ কুমার দাশকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় তাকে কক্সবাজার আদালতের উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে আত্মসমর্পণ করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

universel cardiac hospital

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, ওসি প্রদীপকে আটক বা গ্রেপ্তার না দেখিয়ে পুলিশ তাকে কক্সবাজার আদালতে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।

র‌্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে বলে আমরা শুনেছি। যেহেতু তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত সংস্থা আমরা (র‌্যাব) তাই ধারণা করছি তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সূত্র জানায়, প্রদীপ কুমার অসুস্থতাজনিত কারণে চট্টগ্রামের লালখান বাজারের পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিএমপি সদর দফতরে আসেন তিনি। এরপরই তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। দুপুর ২টায় তাকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। তাকে বহনকারী মাইক্রোবাসের পাশে তিনটি গাড়িতে পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য ছিল। আরেকটি ভ্যানে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ছিল বলে জানা গেছে।

তবে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ বা পুলিশের মিডিয়া এবং পিআর বিভাগ ওসি প্রদীপকে গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

অপরদিকে পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘দুপুরে প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার সিএমপি কার্যালয়ে এসে আত্মসমর্পণের ইচ্ছাপোষণ করেন। তাই তাকে আত্মসমর্পণ করাতে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

এর আগে বুধবার রাত ১০টায় টেকনাফ থানায় আদালতের নির্দেশে মেজর সিনহার বোনের করা হত্যা মামলাটি নথিভুক্ত হয়। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩, টেকনাফের বিজ্ঞ বিচারক তামান্না ফারহার আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া। পরে আদালত সেটি টেকনাফ থানাকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এছাড়া মামলার তদন্তভার দেয়া হয় র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ককে।

মেজর সিনহার বোনের দায়ের করা মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে দ্বিতীয় আসামি করে আরও ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।

উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে