ঝুঁকিপূর্ণ, অসুস্থ কর্মচারী ও সন্তানসম্ভবা নারী বাদে সব সরকারি চাকরীজীবীকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা জারি করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতর।
স্বাভাবিক সময়ের মতোই অফিসের নির্ধারিত সময় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে কাজ করতে হবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যেও বেশকিছু মন্ত্রণালয় ও দফতর নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হতে নির্দেশনা জারি করেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৬৮ দিন সাধারণ ছুটির পর ১ জুন থেকে ২৫ ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যায়ক্রমে অফিসে এসে ও বাকিরা বাসায় থেকে অফিসের কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু এখন সব কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক নিয়মে অফিস করতে হবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ, অসুস্থ কর্মচারী ও সন্তানসম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে লকডাউন তুলে ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বাড়ি বসে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হলেও সেই নিয়ম তুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আগের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে হবে বলে মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে তারা আগেই নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই নির্দেশনা পেয়ে অনেক মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে তা মৌখিকভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানিয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক অফিস করছেন। অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেও সবাই একসঙ্গে অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, সব কর্মকর্তাকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তাকে সেই নির্দেশনা মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি, সকল অফিসারদের অফিসে থাকতে বলেছি। এখন অফিসারদের প্রতি নির্দেশ হলো- সকল অফিসার ৯টা-৫টা অফিস করবেন। ৫টার পরেও যদি অফিসারদের থাকতে হয়, থাকবেন। তবে বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থদের বেলায় এটি প্রযোজ্য নয়।
লকডাউন শেষে গত ৩১ মে থেকে অফিস চালুর পর মৌখিক নির্দেশনায় সরকারি দপ্তরগুলোতে একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে অবস্থান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। ফলে এখনও মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে সবাইকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সচিব হারুন সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউনের পর অফিস খোলার সময় যেভাবে কাজ করতে সুবিধা হয়, আমরা মন্ত্রণালয়গুলোতে সেভাবে অফিস করতে বলেছিলাম। তখন অনেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে (একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি উপস্থিত না থাকা) ফলো করেছিল। সেই নিয়ম এখন আর কার্যকর নেই।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাস মহামারীতে এ পর্যন্ত দুই লাখ ৪৯ হাজার ৬৫১ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ হাজার ৩০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।