করোনা মহামারি সংকটের মধ্যেই তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেকর্ড হয়েছে। এবার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩৮ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এ নিয়ে মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে রিজার্ভে পাঁচবার রেকর্ড হলো।
সর্বশেষ গত সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৮০৯ কোটি ডলারে। রেমিট্যান্সর ওপর ভর করেই নতুন এ উচ্চতায় রিজার্ভ পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও এআইআইবির ঋণ সহায়তাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
এদিকে রিজার্ভের অর্থ স্থানীয় প্রকল্পের বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবহার করতে চায় সরকার। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ পাঁচবার রেকর্ড গড়েছে। গত ৩ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪ জুন সেই রিজার্ভ আরো বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।
এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ৩০ জুন রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এক মাস পর ২৮ জুলাই রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরও অতিক্রম করে। এর তিন সপ্তাহ পর সোমবার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রণোদনা দেওয়ার ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স বাড়তে থাকে।
তবে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনার প্রভাবে গত অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে রেমিট্যান্সের গতি নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। রোজার ঈদের মাস মে থেকে আবার ঊর্ধ্বগতি ধারায় ফেরে রেমিট্যান্স এবং কোরবানির ঈদের পরও এই ঊর্ধ্বগতি ধারা বজায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আগস্ট মাসের ১৬ দিনে ১০১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। গত বছরের আগস্ট মাসের এই ১৬ দিনে ৮১ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এ ছাড়া গত জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই এক মাসে এত বেশি রেমিট্যান্স আসেনি।