নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি করা সৌদি প্রবাসী মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি) মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ (সিটিটিসি)। তার ফাঁদে পড়ে কথিত বায়াত নিয়ে সৌদি যাওয়ার চেষ্টাকালে গত মে মাসে ১৯ জনকে আটক করে পুলিশ। তাকে সৌদি আরব থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশের এই ইউনিটটি।
কথিত এই ইমাম মাহাদীর নাম মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান। শনিবার রাজধানীর রমনা থানায় সিটিটিসির একজন পরিদর্শক বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন। মামলায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কথিত ইমাম মাহাদী ওরফে আরমান ইসলাম ধর্মের অপব্যাখামূলক, মনগড়া ও ভিত্তিহীন বক্তব্য অডিও ভিডিও আকারে ইউটিউব চ্যানেল ‘তাকওয়া অনলাইন টিভি’সহ অন্যান্য ইউটিউব চ্যানেল এবং ‘মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান’ নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে প্রচার করে আসছিলেন। প্রকাশিত ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় ওই ব্যক্তি নিজেকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর বংশধর হিসেবে দাবি করেন এবং স্বপ্নযোগে ইমাম মাহাদী হিসেবে ঘোষিত বলে বার্তাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা জানান।
ইমাম মাহাদীর পরিচয় ধারণ করে এ ধরনের অসত্য, বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও তথ্য উপাত্ত প্রদানের ফলে দেশের ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়াসহ ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
ওই ব্যক্তি তার প্রকাশিত ভিডিওবার্তায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি করে তার কাছে কথিত ‘বায়াত’ গ্রহণের জন্য বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানায়। সাম্প্রতিককালে তার এরূপ বক্তব্যে বিভ্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে তার নিকট কথিত বায়াত গ্রহণ করে ইমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে কথিত জিহাদে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ার সময়ে গত ৪ মে ১৭ জন এবং ৭ মে আরও দুজনসহ মোট ১৯ জন পুলিশের কাছে ধরা পড়ে।
এছাড়াও ইতিপূর্বে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের পাঁচজন ছাত্র ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরব গমন করে তার অনুসারী হিসেবে যোগদান করে বলে জানা যায়।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, ২০০৬ সালে মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর মালয়েশিয়া থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু প্রথাগত ক্যারিয়ারে অংশগ্রহণের পরিবর্তে তিনি ধর্মীয় ভাবধারায় দীক্ষা নেন। ২০১৬ সালে একবার উগান্ডা গিয়ে একমাস অবস্থান করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে অক্টোবর মাসে তিনি সৌদি আরব গিয়ে নিজেকে কথিত ইমাম মাহাদী হিসেবে ঘোষণা করেন।