না ফেরার দেশে চলে গেলেন খ্যাতিমান ভাস্কর মৃণাল হক। শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে গুলশানের বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
মৃণাল হকের গ্রাফিক্স ডিজাইনার আলমগীর গণমাধ্যমকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, মৃণাল হক ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। গতকাল রাতে সুগার লেভেল কমে যাওয়ার পাশাপাশি অক্সিজেনের মাত্রাও কমে গিয়েছিল। পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃণাল হক ১৯৫৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। ১৯৮৪ সালে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
১৯৯৫ সালে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে এবং সেখানে প্রথম ভাস্কর্যের কাজ শুরু করেন। ২০০২ সালে দেশে ফিরে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। দেশে আসার পর নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেন মতিঝিলের ‘বক’ ভাস্কর্যটি।
২০০৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত গোল্ডেন জুবিলি টাওয়ার তারই শিল্পকর্ম। এছাড়া সারাদেশে অনেকগুলো ভাস্কর্যের কাজ করেছেন।
রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ’, হোটেল শেরাটনের সামনে ‘রাজসিক’, পরীবাগ মোড়ে ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা’, ইস্কাটনে ‘কোতোয়াল’, সাতরাস্তায় ‘ময়ূর’, এয়ারপোর্ট গোলচত্বরের ভাস্কর্য, নৌ সদর দপ্তরের সামনে ‘অতলান্তিকে বসতি’, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের ভাস্কর্য, বঙ্গবাজারে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন শিল্পকর্মের নির্মাতাও তিনি। আরও নির্মাণ করেছেন ফাইবার গ্লাসের আশ্রয়ে বিশ্ববিখ্যাত কবি, রাষ্ট্রনায়ক থেকে নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা ও ফুটবলারের প্রতিকৃতি।