মানবপাচার, ভিসা জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার বাংলাদেশি এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলের ঘটনায় তদন্তে নতুন নতুন তথ্য উদ্ঘাটিত হচ্ছে। পাপুলকে ভিসা জালিয়াতিতে সহযোগিতায় গ্রেফতার হওয়া দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার-সেক্রেটারি মেজর জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহর কুকীর্তি ফাঁস হচ্ছে।
দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশন জানিয়েছে, জেনারেল মাজেন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ৫ হাজার পাকিস্তানি নাগরিক ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে কুয়েত প্রবেশ করেছে। সেসব কাগজপত্রে তিনি স্বাক্ষর করেছেন।
গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেল মাজেন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট সংশ্লিষ্ট সব লেনদেনের কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ইরাক ও সিরিয়ার নাগরিকদের দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মাজেন দায়িত্বে থেকে ১ হাজার ইরাকি ও কয়েকশ’ সিরিয়ান নাগরিক প্রবেশে অনুমোদন দিয়েছেন।
এছাড়া কুয়েতে বাংলাদেশি এমপি পাপুলের কাছে আর্থিক সুবিধা নিয়ে কয়েক হাজার বাংলাদেশিকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন তিনি।
পাপুলের সঙ্গে হওয়া ঘুষ লেনদেনগুলো সুনির্দিষ্ট করতে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল জারাহের স্বাক্ষরিত সব কাগজপত্র যাচাই করছে।
জেনারেল মাজেন ও পাপুলকে কুয়েতের একটি কারাগারে রাখা রয়েছে। কুয়েতি কর্তৃপক্ষ পাপুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও কোম্পানি জব্দ করেছে।
কুয়েতের মারাফিয়ি কুয়েতিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকতা ছিলেন শহিদ ইসলাম পাপুল। এ কোম্পানির মাধ্যমে নিরাপত্তা কর্মী ও শ্রমিক সরবরাহ করতেন পাপুল। এছাড়া কুয়েতে পাপুলের আরও তিনটি কোম্পানি রয়েছে। তিনটিই পরিচ্ছন্নতা ও ঠিকাদারি কোম্পানি।
বাংলাদেশি শ্রমিকদের আনতে ও কাগজপত্র তৈরিতে সকল প্রকার ঘুষ এবং উপঢৌকন দেয়ার পরও পাপুল বছরে ২ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার আয় করতেন।
কুয়েতে বাংলাদেশি দূতাবাসের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন।
কুয়েতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আলকাবাসের বরাতে বলা হয়, পাপুলের অপকর্মে সহযোগিতার অভিযোগে সেখানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।