নিয়ম-নীতি সহজ করাই হতে পারে বড় প্রণোদনা ।। ড. আতিউর রহমান

মত ও পথ

ড. আতিউর রহমান
ড. আতিউর রহমান। ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়েই কভিড-১৯ মহামারি সংক্রমণের ঝড় এখনো বয়ে চলেছে। এরই মধ্যে মানুষ জীবিকার স্বার্থে নয়া এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে বিশ্ব অর্থনীতি এ বছর কিভাবে এগোবে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, বিশ্ব অর্থনীতি নানা স্তরে বিভিন্নভাবে জড়াজড়ি করে বেড়ে উঠেছে। কিন্তু কভিড-১৯ ওই স্তরগুলোর ভেতরে যে আন্ত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, তা দুমড়েমুচড়ে ফেলেছে। আর সম্পর্কগুলোর ধরনই এমন যে কয়েকটি স্তর ছিটকে পড়লে পুরো বিশ্ব অর্থনীতিই সংকটে পড়ে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইনের অনেক ‘লুপ’ এখন মিসিং। এই মহামারির আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছিল। কিন্তু এই মহামারি সেই যুদ্ধকে আরো তীব্রতর করেছে। কোনো দেশ অবশ্য এই অবস্থায় আবার লাভবান হচ্ছে। তবে তা নির্ভর করছে কোন দেশের প্রযুক্তি ও অন্যান্য অবকাঠামো কতটা বিশ্বমানের এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ম-নীতি কতটা সহজ সেসবের ওপর।

এমনই এক পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুম ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করেছে। এপ্রিল থেকে জুন—এই তিন মাস আমাদের অর্থনীতিও কার্যত বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধস নেমেছিল, বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ী এবং ছোটখাটো উদ্যোক্তা ছাড়াও ‘দিন আনি দিন খাই’ বাস্তবতার মানুষের জীবন ও জীবিকা দারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এক জরিপে জানা যায়, ঢাকা থেকেই ১৬ শতাংশ মানুষ (যারা এ ধরনের জীবিকানির্ভর) গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। দারিদ্র্যরেখার সামান্য ওপরে থাকা কয়েক কোটি মানুষ হঠাৎ করে দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে গেছে। রিকশাওয়ালাদের আয় ৪৩ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল। গৃহকর্মীদের অর্ধেকের মতো কাজ হারিয়েছিল। খুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের আগের আয়ের অর্ধেকের মতো খোয়া গেছে। ভুলে গেলে চলবে না, দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ এখনো কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলোতেই কাজ করে বেঁচে থাকে। এর ওপর নতুন করে সংকট সৃষ্টি করেছে প্রলম্বিত বন্যা। গ্রামে গিয়েও যেন এই দুঃখী মানুষের স্বস্তি নেই। বন্যায় ভেসে গেছে ফসল, পুকুরের মাছ। ক্ষতির মুখে পড়েছে পোল্ট্রি ও গবাদি পশুর খামার। আমন ফসলের সম্ভাবনার বড় ক্ষতি হয়ে গেছে বন্যার্ত অঞ্চলে। রবি ফসলই এখন একমাত্র ভরসা।

universel cardiac hospital

সরকার পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নামমাত্র সুদে (২%) বেতন দিয়েছে তিন মাস ধরে। তাই খাতটি ধীরে ধীরে পুরনো ব্যবসা ফিরে পেতে শুরু করেছে। সামনে বড়দিন। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা পুরনো ক্রয়াদেশ চাঙ্গা করতে শুরু করেছে। নতুন করেও কিছু আদেশ দিচ্ছে। এ সময়টায় এই খাতকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার জন্যই সরকার বড়মাপের চলতি মূলধন প্রণোদনা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শুধু এই খাত কেন, আনুষ্ঠানিক পুরো শিল্প খাতের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা কর্মসূচি অনেক আগেই ঘোষণা করেছে। তবে বাস্তব কারণেই রপ্তানি খাতকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই খাতের কর্মীদের বেতন ছাড়াও প্রি-শিপমেন্ট সহায়তা, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বৃদ্ধি ছাড়াও চলতি মূলধন সহযোগিতা বাড়িয়েছে। আর তার সুফলও তারা পেতে শুরু করেছে। এর বাইরেও সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ছাড়াও কৃষকদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি, এমএফআইদের জন্য ঘূর্ণায়মান তিন হাজার কোটি, প্রবাস থেকে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার কম খরচের ঋণের ব্যবস্থা করেছে। এর বাইরে সামাজিক সুরক্ষা, ত্রাণ ও নগদ সহায়তাও দিয়ে যাচ্ছে।

এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো কী করে দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় সেটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়নের ব্যবস্থা করেছে। সরকারও এসব কর্মসূচিতে গড়ে প্রায় ৫ শতাংশ হারে সুদ ভর্তুকি দিতে রাজি হয়েছে। সরকারের আয় কম। রাজস্ব সংগ্রহের গতিও কম। এ জন্য সরকারকে ব্যাপক হারে কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি যেহেতু কমের দিকে, তাই এ নিয়ে খুব বেশি দুর্ভাবনার কারণ নেই। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বেশি করে ঋণ নেওয়া, পাইপলাইনে থাকা ঋণের বাড়তি ছাড় করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তা যেন অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে মুদ্রানীতি নমনীয় করা হয়েছে। নানাভাবে তারল্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক রেট, রেপো রেট, সিআরআর ও এসআর কমানো ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি রেপো ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ঋণ-আমানত অনুপাত বেড়েছে। বিদেশ থেকে প্রবাসীরা যাতে দেশি-বিদেশি মুদ্রায়ই সঞ্চয় করতে পারেন তার ব্যবস্থা হয়েছে। তবে ঝুঁকিব্যবস্থায় খানিকটা শঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সমস্যা দূর করার জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পাইলট কর্মসূচি চালু রেখেছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এই কর্মসূচি আরো বিস্তৃত করে দ্রুত বাস্তবায়নে যাওয়া দরকার। যেসব খুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তা রপ্তানি করতে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে, তাদের জন্য আলাদা একটি ‘রপ্তানি গ্যারান্টি স্কিম’ চালু করা যেতে পারে। সাধারণ বীমা করপোরেশন এই স্কিমটি চালুর জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে ঝুঁকি নিয়ে হলেও অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য অনেক নীতি-সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর সে কারণে ধীরে ধীরে হলেও নয়া বাস্তবতায় মানুষ পুরনো কাজকর্মে ফিরে আসছে। অর্থনীতি খুলে না দিলে ‘খাওয়া-পরার’ দায়িত্ব কে নিত? সরকারের রাজস্ব ও খাদ্যভাণ্ডার এতটা বিপুল নয় যে কোটি মানুষকে ঘরে ঘরে অর্থ ও খাবার দেওয়া সম্ভব ছিল। আর মানুষের আয় বন্ধ থাকলে অর্থনীতিতে ভোগের পরিমাণ কমবে। ভোগ ও চাহিদা না বাড়লে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে কী করে? তাই সব দিক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখনকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুটি।

১. পুরো জাতি যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে নয়া বাস্তবতায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আশার কথা, এদিকটিতে সরকার নজর রাখছে এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। তবে আরো সতর্ক থাকতে হবে এ ক্ষেত্রে।

২. ঘোষিত প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা। আর তা হচ্ছে কি না, সেদিকটি ভালো করে মনিটর করার জন্য উপযুক্ত ফলাফলভিত্তিক মনিটরিং পদ্ধতি গড়ে তোলা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।

চেম্বারের প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে প্রণোদনা কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চাপ দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ বজায় রেখেছে। অর্থনীতি আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ালে বাজারের ধর্ম অনুযায়ী চাহিদা বাড়বে। আর তখন ঋণের জন্য উদ্যোক্তারা ব্যাংকে আসবে। ভয় হলো, যারা খুব চালাক-চতুর তারাই বেশি করে ব্যাংকে আসবে। ঋণখেলাপির সংজ্ঞা শিথিল করায় নিশ্চয়ই সুযোগসন্ধানীরা ফাঁকফোকর খুঁজবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে। পর্ষদ যেন অযথা ব্যাংকারদের কাজে হস্তক্ষেপ না করতে পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রণোদনা কর্মসূচির কোথাও যদি কোনো জটিলতা থাকে, তা-ও আলাপ করে দ্রুত বদলে ফেলার মতো উদারতা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেখাতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এসএমই খাতের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৩৫ শতাংশ ঋণ ট্রেডিং খাতে দেওয়া যাবে। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বেশি হারে দিতে হবে; কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে এটি ঠিক আছে। এখন তো স্বাভাবিক সময় নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যেই চাহিদা বেশি। তাই তাদের জন্য এই অনুপাত সহজেই ৫০ শতাংশ করা যায়।

এতসব জটিলতা সত্ত্বেও আমাদের পরিশ্রমী মানুষ বসে নেই। কৃষক বাড়তি উৎপাদন করছে। প্রবাসী আয় বাড়ছে। রপ্তানি আয়ও বাড়তে শুরু করেছে। প্রবৃদ্ধি আশান্বিত পর্যায়েই রয়েছে। শেয়ারবাজার নতুন নেতৃত্বের ওপর ভরসা রেখে ভালোভাবেই পারফরম করছে। এমন বাস্তবতায় আমাদের রেগুলেটর, এনবিআর, বিডা, বেজাসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকেই পুরনো ধ্যান-ধারণা পরিহার করে সব নিয়ম-নীতি দ্রুত সহজ থেকে সহজতর করার উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু প্রজ্ঞাপনে কাজ হবে না। বাস্তবে গ্রাহক সহজ সুবিধাগুলো পাচ্ছেন কি না, সেটিই বড় কথা। আর এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হবে। বেজা ও বিডা সম্প্রতি বেশ কিছু সেবা এক ‘প্ল্যাটফর্মে’ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনও মিলেমিশে বেশ কিছু নতুন নিয়ম-নীতি সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোই হবে ব্যবসায়ীদের জন্য সত্যিকারের প্রণোদনা।

আগামী দিনের ব্যবসা-বাণিজ্য হবে পুরোটাই ‘ডাটানির্ভর’। তাই ‘ডাটা’ ব্যবহার করার কৌশল তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি করে শেখাতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের দেশের প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছেন। যদি গড়ে ২০ হাজার ডলার করেও তাঁরা আয় করেন, তাহলে তো ১৩ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে আসার কথা। হয়তো আসছেও। তবে খুব সহজে নয়। বিদেশে কারো হিসাবে জমা করে হয়তো ফ্রিল্যান্সাররা এই অর্থ আনছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং মোবাইল আর্থিক সেবা মিলে খুব সহজ একটি অ্যাপ কেন এখনো আমরা এই তরুণদের জন্য তৈরি করতে পারলাম না? পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ‘ন্যানো’ বা অতি ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির ব্যাপক বিস্তার করা সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে সিটি ব্যাংক ও বিকাশকে অতি ক্ষুদ্র ঋণের এমন একটি পাইলট করার সুযোগ দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে সঙ্গে নিয়ে প্রকৃত ক্যাশ ফ্লো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে ছোটখাটো উদ্যোক্তাদের কয়েক মিনিটের মধ্যে ঋণ অনুমোদন করে তাদের ই-ওয়ালেটে জমা করে দেওয়া খুবই সম্ভব।

ফিরে আসি প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রশ্নে। এ ক্ষেত্রে বিলম্ব না করে একটি মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোন ব্যাংক কোন প্যাকেজে গত মাসে কত টাকা ঋণ দিয়েছে, কোন অঞ্চলে, কোন পেশার মানুষকে, নারী উদ্যোক্তাকে কত দিয়েছে, আগামী মাসে তাদের পরিকল্পনা কী—এসব তথ্যসমেত একটি মনিটরিং কাঠামো গড়ে তোলা খুবই সম্ভব। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি মনিটরিংয়ের একটি চমৎকার ‘ড্যাশবোর্ড’ তৈরি করেছিল। সেই আদলেই এটি হতে পারে। কাজ দেখভালের জন্য একটি মনিটরিং কমিটিও কাজ করতে পারে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, ব্যাংকার ও চেম্বারদের প্রতিনিধি ছাড়াও একজন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি থাকতে পারে। এই কমিটি রাজস্বনীতির আওতায় যেসব সামাজিক সুরক্ষা সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, তা-ও মনিটর করতে পারে। শুধু আর্থিক খাত, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যথেষ্ট নয়। রাজস্ব খাতকেও আরো সক্রিয় হতে হবে। প্রণোদনার টাকা ঠিকমতো যাচ্ছে কি না, তা বোঝার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্রের সহযোগিতাও নেওয়া যেতে পারে। এই কেন্দ্রের ১৬২৩৬ হটলাইনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করতে পারেন। এ জন্য গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্রটিকে আরো আধুনিক যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে সক্ষম করা যেতে পারে।

যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই অংশীদারি গড়ে তোলা যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন, ব্যাংক, এমএফআই, কমিউনিউটি রেডিও, মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক মঞ্চে এনে যত দ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে ততই দেশের জন্য মঙ্গল। আমাদের সমাজ ও অর্থনীতির সহনক্ষমতা প্রশ্নাতীত। তাই চলমান সংকটকে সুযোগে পরিণত করে অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা করার প্রচেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

dratiur@gmail.com

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে