সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে আরও দুইটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা মো. আজিজ ও নূর মোহাম্মদ নামের দুই ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগ এনে সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এ দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত মো. আজিজ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ডেইলপাড়ার বাসিন্দা এবং নূর মোহাম্মদ একই ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা। নিহত মো. আজিজের মা হালিমা খাতুন ও নুর মোহাম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী নূর হোসেন নাহিদ ও মো. মোস্তফা সাংবাদিকদের জানান, দুটি মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
আইনজীবীরা জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহার দুটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য মামলা হয়েছিল কিনা, নিহত দুজনের ময়নাতদন্ত হয়েছিল কিনা, তা আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহত আজিজের মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর টেকনাফ থানার একদল পুলিশ মো. আজিজ, নুর হাসান ও আবুল খায়ের নামের তিনজনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মো. আজিজের পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করে ওসি প্রদীপসহ অন্যরা। না দিলে আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এতে নিরুপায় হয়ে বিভিন্নভাবে ৫০ হাজার টাকা পুলিশকে দেয় আজিজের পরিবার। কিন্তু ১৯ অক্টোবর রাতে টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়া নৌঘাট এলাকায় আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়।
অপরদিক নূর মোহাম্মদের মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৯ মার্চ বীজ ও সার আনতে কৃষি অফিসে গেলে তাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে ওসি প্রদীপসহ অন্যরা। না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে মারা হবে হুমকি দেয়া হয়। তাই বাধ্য হয়ে বিভিন্নভাবে জোগাড় করে পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু ২১ মার্চ রাতে নুর মোহাম্মদকে থানা থেকে বের করে মেরিন ড্রাইভ সড়কের রাজারছড়া এলাকায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে নূর মোহাম্মদকে কয়েকজন পুলিশ ঝাউবাগানে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।