বিশেষজ্ঞ টিমের ট্রায়াল, পানি কমলেই বসবে পদ্মা সেতুর স্প্যান

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মা সেতু
ফাইলছবি

পরবর্তী স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু করার জন্য সোমবার দিনভর পদ্মা সেতু এলাকায় স্প্যান বিশেষজ্ঞ টিম ট্রায়াল (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করেছে। পদ্মা নদীর পানি বর্তমান উচ্চতা থেকে কমে ৪.৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হলে সেতুর পরবর্তী স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হবে।

চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ৩২তম স্প্যান এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি সবগুলো স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রকৌশলীদের। ইতিমধ্যে সেতুর পিয়ারের উপরে বসানোর জন্য চারটি স্প্যান পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।

universel cardiac hospital

সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৗশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানান, বন্যার কারণে সেতুতে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম এতদিন স্থগিত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট চীনা স্প্যান বিশেষজ্ঞরা দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। পানি কমতে শুরু করায় আবারো স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে বিশেষজ্ঞ টিম এসেছিল। সোমবার দিনব্যাপী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে। তবে পানির উচ্চতা বেশি থাকায় এখনই স্প্যান বসানো যাচ্ছে না। আশা করা হচ্ছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই পানি কমে যাবে। চলতি মাসে শেষের দিকে ৩২তম স্প্যান বসানো হতে পারে। আর ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১০টি স্প্যান পিয়ারের উপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, পরবর্তী চারটি স্প্যান পিয়ার ১-২, ২-৩, ৩-৪ ও ৪-৫নং এ বসানো হবে। বর্তমান সময়ে পদ্মায় নাব্য সংকট থাকলেও এসব পিয়ার মূল নদীতে হওয়ায় স্প্যান বসাতে নাব্য সংকট কোনো বাধা হবে না বলে জানান তিনি।

এর আগে গত চলতি বছরের ১০ জুন সর্বশেষ ৩১তম স্প্যান পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছিল।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩১টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনাসহ বিভিন্ন কারণে আরেক দফা সময় বেড়েছে এই প্রকল্পের। সঙ্গে বেড়েছে খরচও। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুতে যান চলাচল করতে পারবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে