মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের জন্য আবাসন আইন বাস্তবায়নে টালবাহানা

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের জন্য আবাসন
ছবি : সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের আবাসন আইন বাস্তবায়নে চলছে টালবাহানা। এর বাস্তবায়নে আরও সময় চেয়েছে দেশটির চাকরিজীবী ফেডারেশন। তবে সময় না বাড়িয়ে দ্রুত এটি কার্যকর করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে দেশটির ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (এমটিইউসি)।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের আবাসন আইন কার্যকর করেছে সরকার। আর এ আইন অমান্য করলে ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানার বিধানও করা হয়েছে।

universel cardiac hospital

এদিকে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা বলছেন, করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে বিদেশি কর্মীদের ভালো আবাসন সরবরাহ করতে তাদের নতুন বিধিবিধানগুলো পূরণের জন্য আরও সময় প্রয়োজন।

এর আগে সরকার মার্চ মাসে ঘোষণা করেছিল, নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই তাদের আইনের অধীনে সমস্ত খাতে কর্মীদের আবাসন সরবরাহ করতে হবে।

নতুন নিয়মে নিয়োগকর্তাদের প্রতিটি কর্মীকে একটি বিছানা প্রদান করতে হবে যা ১.৭ বর্গ মিটারের চেয়ে কম নয়। প্রতিটি কর্মীকে অবশ্যই একটি গদি দিতে হবে যা কমপক্ষে ১০ সেন্টি মিটার, একটি বালিশ এবং একটি কম্বলও প্রদান করতে হবে। প্রতিটি কর্মীকে অবশ্যই লকসহ একটি আলমারি দিতে হবে।

মালয়েশিয়ার এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক শামসুদ্দীন বরদান বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নিয়ম মেনে চলার জন্য আরও বেশি সময় প্রয়োজন। নিয়োগকর্তাদের গাইড করার জন্য কমপক্ষে এক বছর সময় আমাদের দরকার। তবে এই চেষ্টা চলাকালীন সময়ে চাপ সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, নির্দিষ্ট আকারের ঘন গদি এবং আলমারি সরবরাহের মতো নির্দিষ্ট শর্তগুলো পূরণে সময় লাগবে।

মালয়েশিয়ায় ২২ লাখ নিবন্ধিত বিদেশি কর্মী রয়েছেন এবং আরও দুই মিলিয়নেরও বেশি যারা অবৈধভাবে কাজ করেন।

তবে কেবলমাত্র নিবন্ধিত কিছু অভিবাসী শ্রমিককে তাদের নিয়োগকর্তারা বাড়িঘর ভাড়া দিয়ে থাকেন, ভাড়া সংক্রান্ত শপ লট এবং নির্মাণ সাইটের অস্থায়ী কোয়ার্টারে।

ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স সভাপতি সোহ থিয়ান লাই মত ও পথকে বলেন, চলমান সংকটে ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানার কারণে সরকারের এই পরিকল্পনা বেশিরভাগ শিল্পের ব্যবসায়িক পুনরুজ্জীবন উদ্যোগকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে।

এমটিইউসি বলছে, বিদেশি শ্রমিকদের আবাসন ও সুযোগ-সুবিধাগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়াই অভিবাসীদের পদ্ধতিগত শোষণের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল জে. সলোমন মত ও পথকে বলেন, মালয়েশিয়ার নিয়োগকারী ফেডারেশন (এমইএফ) দ্বারা শ্রমিকদের আবাসনের বিষয়ে নতুন আইন কার্যকর না করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করার কারণগুলো হতাশাজনক। কারণ নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের শালীন জীবনযাপনের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করে চলেছে। অল্প দক্ষ এবং স্থানীয়ভাবে অভিবাসী শ্রমিকদের স্বল্প বেতনে নিয়োগ দিয়ে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে চলেছে তারা। এটি অবশ্যই লক্ষ্য করা উচিত যে, প্রতিবার মালয়েশিয়ায় নিয়োগকর্তাদের শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বা তাদেরকে কিছুটা চাকরির সুরক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়।

তিনি আরও বলেন, অভিবাসী শ্রমিকরা স্বল্প বেতনের পাশাপাশি নানা সমস্যায় ভুগছেন, তারা সামান্য আইনি সুরক্ষাসহ জটিল ও অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতেও জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। দেরি না করে শ্রমিকদের আবাসন, সুযোগ-সুবিধার আইন বাস্তবায়নে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন এ কংগ্রেস নেতা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে