যে কোনো সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে পারেন– এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর মতিহার থানায় তারা জিডি করেন বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
নিরাপত্তা চাওয়া শিক্ষকরা হলেন– বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক আলী রেজা, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক অসিত রায়, সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তরিকুল হাসান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এক্রাম উল্লাহ ও নাট্যকলা বিভাগের ফারুক হোসাইন।
তাদের প্রত্যেকেই বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষক স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউনঞ্জে সৌজন্যমূলক আলোচনা করছিলেন। সে সময় মামুন নামের একজন বহিরাগত এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক বহিরাগত ডিন কমপ্লেক্সের সামনে পার্কিং করা শিক্ষকদের গাড়িগুলোর (নম্বর প্লেটসহ) গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছিলেন।
এই ঘটনায় তারা শঙ্কিত এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তাদের নেতৃত্বে ব্যক্তিগত হামলা হতে পারে এবং রাস্তায় আমাদের গাড়িগুলোর ক্ষতিসাধন করা হতে পারে। ইতিপূর্বে মামুন নানাজনের প্ররোচনায় বিভিন্ন শিক্ষকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং নানাজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার কাজে লিপ্ত রয়েছেন।
জিডিতে শিক্ষকরা আরও উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক ক্লাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবাধে বিচরণ কীভাবে সম্ভব এবং কেন করতে দয়া হচ্ছে, তা আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় উপরোক্ত আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি যথাযথ তদন্তপূর্বক আমাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে চিন্তার অধিকার আমাদের আছে। তবে কোথায় বসবো কীভাবে বসবো বা কতজন বসবো সে নিয়ে বহিরাগত কেউ এসে ছবি তোলা ও নজরদারি করা অবশ্যই শঙ্কার। যারা এসব কাজের সাথে যুক্ত তাদেরকে বর্তমান প্রশাসন চাকরির আশা দিয়ে রেখেছে। তাই তারা শিক্ষকদের সাথে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছে।