মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করণের চুক্তি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০০২ সালের আরব শান্তি পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিত ফিলিস্তিন। ঐ শান্তি পরিকল্পনা অনুসারে ইসরায়েলের ১৯৬৭ সালের সীমান্ত প্রত্যাহার, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের বিষয়ে স্থায়ী সমাধান এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেই কেবল ইসরায়েলিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথা আরব দেশগুলোর। তবে সম্প্রতি মার্কিনীদের মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহারাইনসহ উপসাগরীয় কোনো কোনো দেশ ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রগঠনের অধিকারকে স্বীকৃতি না দিয়েই যেভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতায় পৌঁছাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ও আরব শান্তি পরিকল্পনার পক্ষে বহুপাক্ষিক সমর্থনের বিষয়টি ক্রমেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। যা কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়।
আমরা মনে করি, দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা যে সংগ্রাম করছে তা থেকে তাদের কোনো কিছুই বিচ্যুত করতে পারবে না। ফিলিস্তিনের স্বার্থকে পাশ কাটিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব বিশ্বের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা জেরুজালেম, আল-আকসা, ফিলিস্তিন ও মুসলিম উম্মাহর সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। এধরনের পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি কুৎসিত দখলদারিকে বৈধতা দেওয়ার পথে এগিয়ে যাওয়া। আরো আগ্রাসী নীতি নিয়ে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল, ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আন্তর্জাতিক আইন, নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যেতে ইসরায়েলকে নিঃসন্দেহে উৎসাহিত করবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের আগের সীমান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিনি শরণার্থী সমস্যার সমাধান, স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমকে স্বীকৃতির মাধ্যমে স্থায়ী ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত। কেননা দ্বি-রাষ্ট্র ব্যবস্থার অধীনে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠিত হলেই এই অঞ্চলে ফিরবে প্রকৃত শান্তির হাওয়া। সুতরাং দ্বি রাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।