টঙ্গীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে আওয়ামী লীগের পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। রোববার বিকেলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত ১৯নং থেকে ৫৭নং পর্যন্ত ৩৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটিতে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাকর্মী ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি এবং হাইব্রিড নেতাদের অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে অভিযোগ করে দলের একাংশের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এরই প্রতিবাদে সোমবার বিকেল থেকে টঙ্গীর আওয়ামী লীগের আঞ্চলিক কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে সমবেত হতে থাকে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় অবরোধ করে।
নেতাকর্মীরা মহাসড়কে বসে “অবৈধ কমিটি মানিনা মানবো না, টাকার বিনিময়ে কমিটি মানিনা, মানবো না, পকেট কমিটি মানিনা মানবো না” সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। ঘণ্টাব্যাপি অবরোধের ফলে সড়কের দুই পাশে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘোষিত পকেট কমিটি বিলুপ্ত করার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জানান, গত রোববার গাজীপুর মহানগরের ১৯নং ওয়ার্ড থেকে ৫৭নং ওয়ার্ড পর্যন্ত ৩৯টি ওয়ার্ডে এক তরফা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান ও সাধারণ সম্পাদক (গাসিক মেয়র) জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে এ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এতে একজন আহ্বায়ক, তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও একজনকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়।
দলের একাংশের নেতাকর্মীদের অভিযোগ দলের দুঃসময়ের নেতাকর্মী ও ত্যাগীদের পদ বঞ্চিত করা হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের দুই নেতা স্থানীয় মন্ত্রীর অনুসারী নেতাদের চিহ্নিত করে কমিটি থেকে বাদ দিয়েছে।
বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধে অংশ নিয়ে টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, দলের জন্য যারা দুঃসময়ে রাজপথে ছিলেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন তাদেরকে বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিতে উপেক্ষিত করা হয়েছে। হাইব্রিড নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। তাই আমরা এ পকেট কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছি।
এসব বিষয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যারা ৪৮ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা তো আওয়ামী লীগের কেউ না। তারা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগের নেতাকর্মী। তাদের কথামতো আওয়ামী লীগ চলতে পারে না। সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনা করে কমিটিতে যোগ্য লোকদেরই কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিতে দলের সবাইকে পদ দেয়া সম্ভব নয়। পুর্নাঙ্গ কমিটি হলে অনেকেই কমিটিতে স্থান পবেন।
অপর দিকে ঘোষিত ৩৯টি ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে আনন্দ মিছিল করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা। নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করায় নেতাকর্মীরা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অভিনন্দন জানান।