কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দেখলেই জ্বলে ওঠে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ত্রয়োদশ আইপিএলেও সেই ধারা অব্যাহত। উদ্বোধনী ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে বুধবার নাইটদের ৪৯ রানে হারিয়ে দারুণ কামব্যাক করল রোহিত বাহিনী। সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরার জন্য তারকারা বরাবরই সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। বুধবার রোহিতের ব্যাটে তারই প্রমাণ পাওয়া গেল। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৫৪ বলে দুর্দান্ত ৮০ রানের (তিনটি চার, ছ’টি ছক্কা) ইনিংস উপহার দিলেন ‘হিটম্যান’। সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যোগ করেন ৯০ রান। যার সুবাদে মুম্বাই ৫ উইকেটে ১৯৫ রান খাড়া করে নাইটদের সামনে।
লক্ষ্য কঠিন হলেও রাসেল, মরগ্যানদের ঘিরে জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন কেকেআর সমর্থকরা। কিন্তু জেতা তো দূরে থাক, ব্যাটে-বলে টক্কর দিতেই ব্যর্থ নাইটরা। এই ধরনের ম্যাচ জিততে গেলে দরকার বড় পার্টনারশিপ। কিন্তু সেটাই গড়ে ওঠেনি কেকেআরের ইনিংসে। ওপেনার শুভমান গিল (৭), সুনীল নারিন (৯) হতাশ করেছেন। তিন নম্বরে নেমে ক্যাপ্টেন দীনেশ কার্তিক (৩০) বাঁ-হাতি নীতিশ রানার (২৪) সঙ্গে জুটি বেঁধে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
আস্কিং রেট নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় আরও চাপে পড়ে যায় কেকেআর। ১৬তম ওভারে বুমরাহ পর পর রাসেল (১১) ও মরগ্যানকে (১৬) ফিরিয়ে নাইটদের জয়ের ক্ষীণ সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেন। ১৪৬/৯ রানেই কেকেআরের লড়াই শেষ হয়ে যায়।
টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয় কেকেআর। দ্বিতীয় ওভারেই শিবম মাভি মেডেন সহ কুইন্টন ডি’ককের উইকেট (১) তুলে নেন। কিন্তু প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসে মুম্বই। রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদব পর পর বাউন্ডারি হাঁকাতেই ফোকাস নড়ে যায় নাইট রাইডার্সের বোলারদের। কামিন্স ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দু’টি ছক্কা সহ ১৫ রান হজম করেন। তখনই বোঝা গিয়েছিল, দিনটা তার নয়।
আইপিএল আসলে অনিশ্চিত এক আসর। এই টুর্নামেন্টে কেউ রাতারাতি হয়ে ওঠেন তারকা। কেউ আবার নায়ক থেকে হয়ে যান খলনায়ক। অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স মাঠে নামার আগে তারকারই সম্মান পাচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল, প্রতিযোগিতা শুধু শুরু হওয়ার অপেক্ষা। কিন্তু ঘটল ঠিক উল্টো। বুধবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৩ ওভারে ৪৯ রান দেওয়ার পর নাইট সমর্থকদের চোখে তিনি এখন খলনায়ক। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কামিন্সের মধ্যে এমন কী ছিল যে নিলামে তাঁকে নেওয়ার জন্য ১৫.৫ কোটি টাকা খরচ করত হয়েছে কেকেআরকে? এর থেকে কোনও অংশে খারাপ বল করতেন না বাংলার আকাশদীপ, মুকেশ কুমাররা। কিন্তু কেকেআর নামেই শুধু কলকাতার নাম রয়েছে। ব্রাত্য বাংলার ক্রিকেটাররা। যদিও কামিন্স (৩৩) ব্যাট হাতে বোলিংয়ের ব্যর্থতা ঢাকার কিছুটা চেষ্টা করেন।
মুম্বাই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার (৪৭) রান আউট হয়ে অর্ধশতরান হাতছাড়া করেন। সৌরভ তিওয়ারি গত ম্যাচেই মতোই চালিয়ে খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২১ রানে। ওই পর্বে পরপর উইকেট পড়ায় মুম্বইয়ের রানের গতি কিছুটা মন্থর হয়। এক্ষেত্রে সুনীল নারিনের (২২/১) বড় অবদান রয়েছে। ভালো বল করেছেন শিবম মাভিও (৩২/২)। হার্দিক পান্ডিয়া (১৮) হিট উইকেট হন। পোলার্ড জাত চেনাতে পারেননি। না হলে সহজেই মুম্বইয়ের স্কোর দু’শোর গণ্ডি টপকে যেত। তাহলে জয়ের ব্যবধান আরও বাড়ত রোহিতদের।