মহামারি করোনাসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের নিচে প্রায় পাঁচ কোটি শিশুর মৃত্যু হতে পারে। শুক্রবার এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
২০১০ সালে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের ‘এভরি ওমেন এভরি চাইল্ড’ আন্দোলনের সূচনার পর থেকে ২০১৯ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুর মৃত্যুহার স্মরণকালের সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। এর মধ্যে একশ কোটিরও বেশি টিকা দেয়া হয়।
ওই কর্মসূচি শুরুর পর থেকে নিরাপদ পানি, ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি থেকে শুরু করে নিরাপদ সন্তান প্রসবে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২০০০ সাল থেকে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ৩৫ শতাংশ।
তবে এই অগ্রগতিগুলো আবারো পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন অঞ্চলে জাতিগত সংঘাত, যুদ্ধ, দারিদ্র্যতা এবং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মহামারিতে স্বাস্থ্য সেবার তীব্র সঙ্কটে দুর্বল শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে।
জাতিসংঘর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি। আরেকটি বিষয় হলো, মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী লকাডাউনে ১৯২টি দেশের ১১৬ কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত। ঘরে থাকা কন্যা শিশু এবং উঠতি বয়সী নারীরা যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের সহিংসতারও শিকার হচ্ছেন।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিটা ফোর রিপোর্টে বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগেও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু প্রতি ছয় সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও মারা যেতো। বিদ্যমান সঙ্কট এ অবস্থাকে আরো জটিল করে তুলবে।
২০১৯ সালে, পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ৮২ শতাংশ এবং মাতৃমৃত্যুর ৮৬ শতাংশ মৃত্যুর বিষয়টি সাব-সাহারা আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি দেখা গেছে। সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিতে নবজাতক, শিশু এবং কিশোর বয়সী মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলছে, প্রতি ১৩ সেকেন্ডে একটি নবজাতক শিশু মারা যায়। গড়ে ৩৩ হাজার মেয়েকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হচ্ছে তুলনামূলক অনেক বেশি বয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে।