সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার ২ নম্বর আসামি তারেকুল ইসলাম তারেককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামিকে ঘটনার চারদিনের মধ্যে গ্রেফতার করল র্যাব ও সিলেট রেঞ্জ পুলিশ। চুল-দাড়ি কেটেও রক্ষা পেলেন না তিনি।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় র্যাব-৯ এর কর্মকর্তা এএসপি কামরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারেককে আমরা গ্রেফতার করেছি। আসামিকে সিলেট নিয়ে আসা হচ্ছে।
গ্রেফতার তারেক সুনামগঞ্জ পৌরশহরের উমেদনগর নিসর্গ ৫৭ নম্বর বাসার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত সরকারের অনুসারী ও ছাত্রলীগকর্মী। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনউদ্দিন ও রাজন নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে সোমবার রাত ১২টায় জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর থেকে মাহফুজুর রহমান মাসুমকে গ্রেফতার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশ।
এর আগে রোববার সকালে ছাতক থেকে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও মাধবপুর থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। রোববার রাতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে রবিউল হাসানকেও গ্রেফতার করা হয়।
একই রাতে হবিগঞ্জ সদর থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেফতার করে র্যাব। এজাহারে নাম না থাকলেও এ ঘটনার পর থেকে আইনউদ্দিন ও রাজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। গ্রেফতার হওয়া অন্য আসামিরাও এ ঘটনায় আইনউদ্দিন ও রাজন জড়িত বলে আদালতকে জানিয়েছেন।
২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী।
এ ঘটনায় গত রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম (তৃতীয়) শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এজাহারনামীয় পাঁচ আসামিসহ সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯ এর হাতে গ্রেফতার আটজনের মধ্যে ছয়জনকে পাঁচদিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।