রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার কার্গোতে পিওন, ট্রলিবয়সহ বিভিন্ন পদে চাকরির নামে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আমিনুর ইসলাম লালু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার বিকালে সিআইডি পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরে এয়ার কার্গোতে চাকরি দেয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমিনুর ইসলাম লালু প্রায় দুই শতাধিক প্রার্থীর কাছে থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে সোমবার তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। মামলার প্রধান আসামি করা হয় আমিনুর ইসলাম লালুকে। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
জানা গেছে, লালু কয়েকটি ভুয়া আউটসোর্সিং কোম্পানি খুলে সেসব কোম্পানির মাধ্যমে বিমানবন্দরে চাকরি দেয়ার জন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এনবিজি এয়ার কার্গো লিমিটেড, নর্থ বেঙ্গল আউটসোর্সিং লিমিটেড, বগুড়া ডেভেলপার অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, বগুড়া ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, মেসার্স হযরত শাহ্ আলী বোগদাদী (রা.) এন্টারপ্রাইজ, নর্থ বেঙ্গল বাজার বিডি লিমিটেড, মেসার্স নুরে মুজেসসুম কর্পোরেশন, এনবিও সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড ও মেসার্স গরিবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজ। লালু এসব কোম্পানি খুলে এখান থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এয়ার কার্গো বিভাগের বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নাম করে প্রায় দুই শতাধিক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে আমিনুর ইসলাম লালুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ৭৩টি ইসলামী ব্যাংক লি. এর ডেবিট কার্ড, নর্থ বেঙ্গল আউট সোর্সিং লিমিটেডের ইস্যু করা বিভিন্ন কর্মচারীর নামে ৯০টি আইডি কার্ড, একটি কম্পিউটার সিপিইউ, একটি প্রিন্টার, লালুর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে সাতটি ব্যাংকের চেক বই, দুটি পাসপোর্ট, নর্থ বেঙ্গল আউটসোর্সিং লি. এর ফর্মে বিভিন্ন পদের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের আবেদপত্র ৮৪টি, লালুর নিজের তিনটি এটিএম কার্ড, এনবিজি এয়ার কার্গো লিমিটেডের প্যাডে আসামি আমিনুর ইসলাম লালু স্বাক্ষরিত পুলিশ তদন্ত রিপোর্টে অতিরিক্ত আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চ মালিবাগ, ঢাকা বরাবর প্রেরিত আবেদনপত্র ১১টি। এদিকে লালুর গ্রেপ্তার সংবাদ পেয়ে ৫০-৬০ জন ভুক্তভোগী সিআইডি অফিসে হাজির হন। যাদের কাছ থেকে প্রতারক চক্রটি ইতোমধ্যে প্রায় দুই থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।