ধর্ষণ মামলার আসামি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে সারাদেশ অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাশ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ চাইলে সারা বাংলাদেশ সচল করতে পারে আবার চাইলে অচলও করে দিতে পারে।
আজ শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের ধর্ষণবিরোধী এক সমাবেশে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার আসামি নুর-মামুনসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া সব ধর্ষণে অভিযুক্ত এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এই সমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়৷ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি, শহীদ মিনার, শাহবাগ হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে সনজিত বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে শাহবাগে আপনারা যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, আপনারা কিন্তু সীমালঙ্ঘন করেছেন৷ এরপর যদি আরেকবার এধরনের ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস করেন তাহলে শাহবাগে আপনাদের (আন্দোলনকারীদের) পিষে ফেলব। কোনো প্রশাসন, মিডিয়া, ছাত্র সংগঠনকে আমরা ভয় পাই না। আমরা আদর্শিক রাজনীতি করি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনীতি করি৷
এসময় তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, যারা ধর্ষণ করে তারা সকলেই ধর্ষক। তাদের সকলকেই গ্রেপ্তার করতে হবে। কোনো প্রকার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ চলবে না৷ আপনার প্রত্যেক জায়গার ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করেছেন৷
কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারছেন না বলেও প্রশ্ন তুলেন তিনি।
সনজিত বলেন, আপনাদের যদি নৈতিক বা প্রশাসনিক শক্তি কম থাকে তাহলে আমাদেরকে সাথে নিয়ে যান৷ আপনাদের সাথে থেকে এদেরকে গ্রেপ্তার করে আপনাদের হাতে তুলে দেব এবং আপনারা আইনের মাধ্যমে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমার বোন ফাতেমা অপরাজেয় বাংলার অপ্রতিরোধ্য স্পৃহার প্রতীক৷ তিনি স্বোপার্জিত স্বাধীনতার দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। ফাতেমা গতকাল রবীন্দ্রনাথের গান গাইতে গাইতে রাজুতে এসেছেন৷ ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’। কিন্তু আজ আমার বোন ফাতেমা একা নয়। ধর্ষকরা যতক্ষণ গ্রেপ্তার না হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী ভাই হয়ে ফাতেমার পাশে থাকবে।
ছাত্রলীগ প্রত্যেকটি হল-ক্যাম্পাসে আছে বলেই ক্যাম্পাসগুলো আজ আফগানিস্তান হচ্ছে না মন্তব্য করে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ১৮ দিন পার হওয়ার পরও ফাতেমার ধর্ষকদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ আমরা আমার বোনের চোখের পানি বিসর্জন হতে দেব না। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।
তিনি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয় বক্তব্য দেন।
এসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান তুষারসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রায় সব নেতা এবং বিভিন্ন ইউনিটের পাঁচ সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।