পদ্মা সেতুতে বসানো গেল না ৩২তম স্প্যান

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মা সেতু
ফাইলছবি

করোনা মহামারি ও বন্যার কারণে প্রায় চার মাস পর বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুতে ৩২তম স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও তীব্র স্রোতের কারণে তা সম্ভব হয়নি। আজ শনিবার স্প্যানবাহী ক্রেন পিয়ারের কাছে নোঙর করতে না পারায় বসানো যায়নি স্প্যানটি। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামীকাল রবিবার স্প্যানটি বসানো হতে পারে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

universel cardiac hospital

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী সকালে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনে তোলার কাজ শুরু হয়। তবে নদীতে স্রোত ও টেকনিক্যাল সমস্যা তৈরি হওয়ায় কিছুটা সময় লাগে। পরে বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি নিয়ে রওনা হয়ে স্প্যানবাহী ক্রেন পিয়ারের কাছে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে আবারও স্রোতের কবলে পড়ে।

দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, বিকাল পর্যন্ত চেষ্টা করেও বসানো যায়নি স্প্যানটি। আপাতত স্প্যানবাহী ক্রেনটি নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে। রবিবার পুনরায় বসানোর কাজ হবে।

সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫নং পিয়ারে বসানো হবে ৩২তম স্প্যান ‘ওয়ান-ডি’। এতে দৃশ্যমান হবে সেতুর চার হাজার ৮০০ মিটার।

এর আগে চলতি বছরের ১০ জুন পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ বসানো হয়েছিল ৩১তম স্প্যান। করোনা আর বন্যা পরিস্থিতির কবলে সেতুর অন্যান্য কাজ চললেও এরপর আর কোনো স্প্যান বসানো হয়নি।

সেতুসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আরও তিনটি স্প্যান ‘ওয়ান-এ’, ‘ওয়ান-বি’, ‘ওয়ান-সি’ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। পরবর্তী চারটি স্প্যান পিয়ার ১-২, ২-৩, ৩-৪ নম্বর পিয়ারে বসানো হবে। আর ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১০টি স্প্যান পিয়ারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩১টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার অংশ।

৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এই সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আরও এক বছর পেছাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে