যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১২১৬ প্রার্থী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিল ১৭৮০ জন। চার বছর পর এবার ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থিতা করছেন ১২১৬ জন।

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একসঙ্গে এত জন প্রার্থিতা করেন। আর আলোচনায় আসেন মাত্র দু’জন। বড় দুই দল রিপাবলিক ও ডেমোক্রেটিকদের দুই প্রার্থী নিয়েই মেতে ওঠেন মার্কিনিরা। আর বাকিরা ঝিমিয়ে পড়েন শোরগোলের বাইরে।

universel cardiac hospital

অথচ দেশটির ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের ৯ অক্টোবরের হিসাব পর্যন্ত সাংবিধানিকভাবে আমেরিকার নির্বাচনে তারাও প্রার্থী। অথচ ট্রাম্প ও বাইডেন ছাড়া বাকি এক হাজার ২১৪ জন প্রার্থীই রয়ে গেছেন আলোচনার বাইরে। তেমন সাড়া জাগাতে পারেননি তারা। বিবিসি।

অবশ্য এবারই প্রথম নয়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসনের ২৩০ বছরের ইতিহাসে কখনও ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থীর বাইরে কেউ আবেদন তৈরি করতে পারেননি।

এমনকি দীর্ঘ এই ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন জর্জ ওয়াশিংটন। এর অর্থ এমন নয় যে, আশাহত হয়ে অন্য কোনো দলের বা স্বতন্ত্র কেউ প্রার্থী হন না। নিজেদের দেশকে নেতৃত্ব দিতে প্রতি বছরই অনেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন।

এবারের এক হাজার ২১৬ জন প্রার্থী হওয়া থেকেই বিষয়টি অনুমান করা যায়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিতে না পারলেও ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের বাইরে কেউ যে আবেদন তৈরি করতে পারেন না এমন নয়। অনেকেই নিজেদের আলোচনায় আনতে সমর্থ হন। কিছু ভোটও পান। কিন্তু দিনশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদ বলতে গেলে সংরক্ষিতই থেকে যায় ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান- যে কোনো এক প্রার্থীর জন্য।

অনেকে আবার প্রার্থী হওয়ার আগেই আলোচনায় এলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হন না। এবার যেমন শুরুতে আলোচনার মাঠ গরম করলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হননি মাইকেল ব্লুমবার্গসহ অনেকে।

প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে টিকে থাকা আলোচিত কয়েকজনের মধ্যে আছেন সাবেক বিউটিকুইন, র‌্যাপার, কনসার্ট পিয়ানিস্ট ও মোটিভেশনাল স্পিকার জেইড সিমন্স, শিশুবিষয়ক অভিনেতা ব্রুক পিয়ার্স এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মার্ক চার্লস।

নিজের প্রার্থিতা সম্পর্কে জেইড সিমন্স বলেন, তিনি অস্বাভাবিক সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কারণ দেশে মানুষ এখন স্বাভাবিক ব্যবসা করতে পারছেন না। বাবা ছিলেন মানবাধিকার কর্মী এবং তিনি সিমন্সকে সেভাবে গড়ে তুলেছেন। মেয়ের প্রতি তার পিতার উপদেশ ছিল- অকার্যকর পরিস্থিতি দেখলে ও অবিচার দেখলে নিজেকে প্রশ্ন কর তোমার চুপ থাকা উচিত কিনা। মন যেভাবে সাড়া দেয়া সেভাবে কাজ কর। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে কম খরচে প্রচারণা চালানো প্রার্থী থাকতে চান সিমন্স।

আরেকজন প্রার্থী শিশুবিষয়ক অভিনেতা ব্রুক পিয়ার্স ‘মাইটি ডাকস’-এ অভিনয় করেছেন। এছাড়া ফার্স্ট কিড কমেডি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। পরে প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোক্তা হিসেবে ক্যারিয়ার বেছে নেন তিনি। তাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিলিয়নিয়ারও বিবেচনা করা হয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনের কারণ সম্পর্কে পিয়ার্স জানান যে, দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। এ কারণে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের লক্ষ নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। তার মতে, পরিকল্পনা ছাড়া এগুনো যায় না। অথচ ২০৩০ সালে পৃথিবীকে কোথায় দেখতে চায় সে পরিকল্পনাই নেই যুক্তরাষ্ট্রের। অথচ সবাই ডুবে আছে কাদা ছোড়াছুড়িতে।

সামাজিক কাজ নিয়ে আমেরিকানদের পাশে থাকতে নির্বাচন করছেন কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মার্ক চার্লস। ধর্মবর্ণ বিবেচনায় না নিয়ে সব মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে চান তিনি। ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রতি বিরক্ত ভোটারদের ভোট নিজের ঝুলিতে ভরতে চান এই প্রার্থী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে