পাশবিকতা রোধে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করেছি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফাইল ছবি

ধর্ষণকে পাশবিকতার সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পশুত্ব বেড়ে গেলেই মানুষ ধর্ষক হয়ে ওঠে। এই পাশবিকতার বিস্তার রোধে আমরা আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করেছি। যেহেতু এখন পার্লামেন্ট চলছে না, তাই এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এভাবে যে কোনো সংকটজনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।’

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানটি গণভবন থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

সম্প্রতি দেশে অস্বাভাবিক হারে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মন্ত্রিসভা ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধানে সায় দেয়। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে সই করেছেন। আজ থেকেই দেশে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চালু হলো।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় আলোচিত ধর্ষণ প্রসঙ্গ ছাড়াও কোভিড-১৯, দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন সফলতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসবে। এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। সেই জন্য আমাদের প্রস্তুতিও আছে। বিভিন্ন সময়ে সাফল্যের সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ড। এর মধ্য দিয়ে সাতশর বেশি নদী প্রবাহিত। এই জায়গায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে জান-মাল বাঁচানো, মানুষকে সতর্ক রাখাটাই বড় কাজ। আমাদের ৫৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন। এর মধ্যে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরাও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।’

দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলে ব্যাপকহারে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, দুর্যোগ সহনীয় ঘরবাড়ি তৈরি করার মতো কার্যক্রম আমরা বাস্তবায়ন করছি। আমরা ড্রেজিং করে, খাল খননের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। কারণ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে দেশের সার্বিক উন্নয়নই আামাদের লক্ষ্য। আমাদের জলাধার, নদী-নালা, খাল-বিলের প্রবাহ যেন বন্ধ না হয়। এগুলো ঠিক না থাকলেই কিন্তু জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ২৪ লাখ মানুষকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাই। কীভাবে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়, বাংলাদেশ সে পথ দেখাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে বেশি করে গাছ লাগানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। সবুজ বেষ্টনীর মাধ্যমে দেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে